গণঅভ্যুত্থানের পর স্থানীয় সরকার কাঠামো ভেঙে পড়ায় নাগরিকরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আলাউদ্দিন মোহাম্মদ। তার ভাষ্যে, এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরিস্থিতি আছে। গতকাল শনিবার ঢাকার বাংলামোটরে কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এক প্রশ্নের জবাবে আলাউদ্দিন বলেন, নাগরিকরা ন্যূনতম সেবা পাচ্ছে না। স্থানীয় সরকার কাঠামো একেবারে ভেঙে পড়েছে। এটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকারের পক্ষ থেকে (স্থানীয় সরকার) নির্বাচনের প্রস্তুতি আছে বলে আমরা জেনেছি। জাতীয় নাগরিক কমিটিও মনে করে, জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন তার সক্ষমতার পরিচয় দিতে স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিনিধিদেরকে জাতীয় রাজনীতির সাথে আলাদা করে বিবেচনা করে একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার গঠন করার জন্য একটি নির্বাচন দরকার। খবর বিডিনিউজের।
আলাউদ্দিন মোহাম্মদ বলেন, আগামী দুই–তিন মাসের মধ্যে সরকার শুরু করলে যুগপৎভাবে জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচন চলতে পারে। এদিনই সিলেটে এক অনুষ্ঠানে সিইসি নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘স্থানীয় সরকার ইলেকশন কবে হবে, না হবে– এই ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য এখন করতে চাচ্ছি না।’
ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, মোবাইলে ফোনের সিম ব্যবহারের মত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবাসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক, কর, ভ্যাট বাড়িয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের জারি করা দুটি অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। একই সঙ্গে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রির বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রক্রিয়া ফের শুরু করার কথাও বলছে দলটি। এছাড়া আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের চুক্তির শর্ত পুনর্বিবেচনা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে কমিটির পক্ষ থেকে। নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর জন্য দুটো অধ্যাদেশ জারি করার ফলে মূল্যস্থীতি ও ব্যবসায়ের খরচ বাড়বে যা সাধারণ মানুষের জীবনমানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকার তার রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য করের আওতা বাড়াবে এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কিন্তু কর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারকে স্মরণ রাখতে হবে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান যাতে নেমে না যায় ও তাদের ভোগান্তি যাতে না বাড়ে।
সম্প্রতি টিসিবির মাধ্যমে ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে জানিয়ে এ প্রক্রিয়া অবমাননাকর বলে মন্তব্য করেন কমিটির সদস্য সচিব। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি এই দেশের নাগরিক কিভাবে ট্রাকের পিছনে ৫ টাকা ১০ টাকা কমে চাল, ডাল, তেল, চিনি কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। আমরা কল্পনা করতে পারি না জনগণের প্রতি কতোটা দায়হীন অনুভব করলে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।