৯ মাস আগে বিয়ে হয়েছিল সানজিদা ও ইকবাল হোসেনের। ইকবাল এসিআই কোম্পানির সেলসম্যান। সুখেই কাটছিল ওদের সংসার। সেই সংসারে নেমে এলো কালো মেঘ। প্রথম সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে প্রাণ গেল তার স্ত্রীর।
প্রাপ্ত তথ্যে ও সরেজমিনে জানা গেছে, রোববার বিকালে প্রসব বেদনা উঠলে সানজিদাকে মিঠাছরা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান স্বজনরা। রাত ৩টায় কন্যা সন্তান প্রসব করার পর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক গৃহবধূকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কজেল (চমেক) হাসপাতালে রেফার করেন। চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বলেন, এখানে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। এদিকে নবজাতকটি চট্টগ্রাম শহরে একটি ক্লিনিকে আইসিউতে আছে।
সানজিদার স্বামী মো. ইকবাল হোসেন বলেন, আমার স্ত্রীকে চট্টগ্রাম নিয়ে গেলে মেডিকেল সেন্টারের আইসিও ডাক্তার বলেছেন, বাচ্চা প্রসবের পর ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে।
মিঠাছরা জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শারমিন আয়েশা বলেন, রাত ৩টায় যখন ওর ব্যথা বেড়ে যায় তাকে ব্যথার স্যালাইন দেওয়া হয়। প্রসূতির পেটে যে কাটা ছিল, ওই কাটা ছিল মাথা বের হওয়ার পরে। ওই কাটা সেলাই না করার কারণ হচ্ছে রোগীকে সেইভ রাখা। তবে ব্লিডিংয়ের জন্য রোগী মারা যায়নি। আমার ধারণা, ওই মহিলা স্ট্রোক করে মারা যেতে পারে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার বিকালে উত্তেজিত এলাকাবাসী হাসপাতাল ভাঙচুর করতে যায়। স্বামীর অভিযোগ, ভুল চিকিৎসাতেই প্রাণ গেছে তার স্ত্রীর। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী, স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও মীরসরাই থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গত সোমবার নিহত গৃহবধূকে দাফন করা হয়।
পরে আলোচনার মাধ্যমে তাদের মধ্যে মিটমাট করা হয়। মিঠাছরা বাজার কমিটির সভাপতি কামাল উদ্দিন বলেন, নিহত পরিবারের অভিভাবকদের দাবি ছিল ২০ লাখ টাকা। আমরা চিকিৎসাধীন শিশুটির আইসিউ খরচসহ ৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করেছি।
মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার্স ইনচার্জ দিপ্তেশ গুপ্ত বলেন, আমাদের পুলিশ টিমসহ সবাই পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।