গতকাল ভোরে বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমীদের খুশির সংবাদ এনে দেয় বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দল। তারা ঐতিহাসিক এক জয় তুলে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নারী দলের বিপক্ষে। সিনিয়র দলের মতো বেলা গড়াতেই বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব–১৯ নারী দলের ক্রিকেটাররাও এনে দেয় আরো একটি সুসংবাদ। মালেয়েশিয়ায় দুর্দান্ত এক জয় দিয়ে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরের পর্বে পা রাখল অনূর্ধ্ব–১৯ দল। আইসিসি নারী অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে স্কটল্যান্ডকে ১৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের আগের দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ বাংলাদেশ গতকাল ব্যাটিয়ে কিছুটা উন্নতি করেছে। নির্ধারিত ২০ ওভারে তারা সংগ্রহ করে ১২০ রান। স্কটিশদের ইনিংস শেষ হয় ১০৩ রানে। এক পর্যায়ে যদিও স্কটিশদের রান ছিল ২ উইকেটে ৬৯। তবে ওভারপ্রতি রানের সমীকরণ ততক্ষণে তাদের জন্য ছিল অনেক কঠিন। বাংলাদেশের বোলার–ফিল্ডাররাও জ্বলে ওঠে ওই সময়ে। ৩৪ রানের মধ্যে ৬ উইকেট নিয়ে জয় নিশ্চিত করে সুমাইয়া–ছোঁয়ারা। প্রথম ম্যাচে নেপালকে হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে হারলেও বাংলাদেশের সুপার সিঙে ওঠা নিয়ে সংশয় বেশি ছিল না। এই জয়েই সেই আনুষ্ঠানিকতা সেরে নিল দল।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ধাক্কা খায় ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই। শূন্য রানে আউট হন সুমাইয়া আক্তার সুবর্ণা। আরেক ওপেনার ফাহমিদা ছোঁয়া রান আউট হন ১২ বলে ১৪ রান করে। টিকতে পারেননি সাদিয়া ইসলামও। কিনি ফিরেন ৬রান করে। তিনে নামা জুয়াইরিয়া ফেরদৌস কিছুটা টেনে নেন দলকে। একটি করে ছক্কা ও চারের সাহায্যে ২০ রান করেন এই কিপার–ব্যাটার। আগের ম্যাচে ২৯রান করা আফিয়া আশিমা এবার একটি করে ছক্কা ও চারের সাহায্যে ১৯ বলে করেন ২১ রান। তবু একশ রানের নিচে গুঁটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল দল। ৭ উইকেট পড়েছিল ৮৮ রানে। অধিনায়ক সুমাইয়া আক্তার ব্যাটিং অর্ডারে একটু নিচে নেমে খেলেন সাত নম্বরে।
অপরাজিত ২৮ রানের ইনিংস খেলে দলকে ১২০ রানে নিয়ে যান তিনি। স্কটল্যান্ডের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন নাঈমা এবং ম্যাকেইরা। জবাবে ব্যাট করতে নামা স্কটিশদের দুই ওপেনারকে দ্রুতই ফেরায় বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেটে অর্ধশত রানের জুটি গড়েন পিপা স্প্রাউল ও নিয়াম মুইর। তবে রান রেটের দাবি পুরোপুরি মেটাতে পারেননি দুজন। ক্রমশ বাড়ছিল রান রেট। বিশেষ করে মুইর দুটি ছক্কা মারার পরও ২২ রান করতে বল খেলেন ৩২টি। এই জুটি ভাঙার পর দ্রুত একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে স্কটিশরা। স্প্রাউলকে বোল্ড করে ফেরান আনিসা আক্তার সোবা। চারটি চার ও একটি ছক্কায় ৪১ বলে ৪৩ রান করেন এই কিপার–ব্যাটার। মূলত তিনি ফেরার পরই তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়তে থাকে স্কটল্যান্ডের ব্যাটিং। স্কটিশদের পরের ছয় ব্যাটারের কেউ পাঁচ রানের বেশি করতে পারেননি। বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং দারুন এক জয় পাইয়ে দেয় দলকে। আর সে সাথে পরের রাউন্ডে জায়গা করে নেয়। বাংলাদেশের লেগ স্পিনার আনিসা আক্তার সোবা চার উইকেট নেন ২৫ রানে। একটি করে উইকেট নিয়েছেন নিশিতা এবং হাবিবা। তবে ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি পান আনিসা আকতার সোবা।