লাখ লাখ ভক্ত–আশেকের আমিন আমিন ধ্বনিতে আর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে গতকাল বুধবার শেষ হলো গাউসুল আযম হযরত মাওলানা শাহ্ সুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ্ মাইজভাণ্ডারী (ক.)-এর ১১৮তম বার্ষিক ওরশ শরিফ। রাত ১২টায় ওরশ শরীফে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ এবং দেশের সার্বিক সুখ সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে মহান আল্লাহর দরবারে স্ব–স্ব মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীনদের আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে ওরশের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।
গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র ওরশ উপলক্ষে এদিন তাঁর রওজাকে ঘিরে ভক্তরা দোয়া, দরূদ, মিলাদ, কিয়াম ও জিকির আজকারে মশগুল থাকেন। ১১৮তম বার্ষিক ওরশে গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহছুফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)। মোনাজাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন তিনি।
সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহসুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)’র আয়োজন ও ব্যবস্থাপনায় এবং নায়েব সাজ্জাদানশীন ও মোন্তাজেম সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারীর ওরশে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মাইজভাণ্ডারে আসেন আশেক–ভক্তরা।
সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী বলেন, মহান আল্লাহর অলিগণের কারণে ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রচার ও প্রসার লাভ করেছে। ইসলামের ক্রাান্তি লগ্নে সবসময় সুফীসাধকরাই ধর্মের আধ্যাত্মিক ও শরীয়তের অবকাঠামোর রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারের পাশাপাশি ইসলামের মৌলিক আদর্শ ও বিশ্বাসের সাথে সমাজ সংস্কৃতির নৈতিক সংস্কারে আধ্যাত্মিক পূর্ণতা লাভের কারিগর হিসেবে কাজ করেছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন খান এগ্রো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দুল হক খান, ক্যাপ্টেন সৈয়দ সোহেল হাসনাত, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর এবং আওলাদে গাউছুল আজম শাহজাদা সৈয়দ মানাওয়ার হোসাইন। আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভাণ্ডারী (শাহ এমদাদীয়া) কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের সচিব শেখ মুহাম্মদ আলমগীরের পরিচালনায় ওরশে মিলাদ পরিচালনা করেন দারুত তায়ালীম প্রধান শিক্ষক মওলানা জয়নাল আবেদীন ছিদ্দিকী। ওরশ উপলক্ষে নায়েব সাজ্জাদানশীন ও মোন্তাজেম সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে মাইজভাণ্ডার ওরশ শরীফ সুপারভিশন কমিটির উদ্যোগে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা ও ভিডিও চিত্র ধারণের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়।
ওরশ উপলক্ষে সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহসুফি সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)’র আয়োজন ও ব্যবস্থাপনায় এবং নায়েব সাজ্জাদানশীন, মাইজভাণ্ডারী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও দারুল ইরফান রিসার্চ ইনস্টিটিউট (ডিআইআরআই)’র ম্যানেজিং ট্রাস্টি সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে ১০ দিন ব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।
সুষ্ঠুভাবে ওরশ সমাপ্ত করতে সহযোগিতা করায় ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃক্সখলা বাহিনীর সদস্য, স্বেচ্ছাসেবকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)।
শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্ট : লাখো আশেক–ভক্তের অংশগ্রহণে গাউসুল আযম হযরত মাওলানা শাহ্ সুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ্ মাইজভাণ্ডারী (ক.)-এর ওরশ গতকাল বুধবার গাউসিয়া হক মনজিলে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে। আগেরদিন বা’দ আসর পবিত্র রওজা গোসলের পর খতমে কোরআন, খতমে গাউসিয়া, খতমে খাজেগান এবং মিলাদ পাঠের মাধ্যমে ওরশে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। দেশের দূর–দূরান্ত হতে বিপুল ভক্ত–আশেকের সমাগম ঘটে। রাতে এস জেড এইচ এম ট্রাস্টের সাংস্কৃতিক সংগঠন মাইজভাণ্ডারী মরমী গোষ্ঠীর শিল্পীরা সামা মাহফিলে সুফি সংগীত পরিবেশন করেন।
গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র ওরশ উপলক্ষে তাঁর রওজা শরিফকে ঘিরে ভক্ত জনতা দোয়া, দুরূদ, মিলাদ, কিয়াম ও জিকির আজকারে মশগুল থাকেন। রাত বারটায় কেন্দ্রিয় মিলাদ মাহ্ফিল ও আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন গাউসিয়া হক মন্জিলের সাজ্জাদানশীন শাহ্ সুফি সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভাণ্ডারী (ম.)।
গাউছিয়া আহমদিয়া মনজিল : সৈয়দ আহমদ উল্লাহ্ (ক.)-এর ওরশ গতকাল বুধবার শাহসুফি সৈয়দ সহিদুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)’র আয়োজনে গাউছিয়া আহমদিয়া মনজিলে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে। গতকাল রাতে জাঁ–নশীনে অছিয়ে গাউসুল আজম শাহসুফি সৈয়দ সহিদুল হক মাইজভাণ্ডারী (ম.)’র সভাপতিত্বে শানে বেলায়ত মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন আনজুমান–এ–মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভাণ্ডারী কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ আহমদ নাভিদ হাসান মাইজভাণ্ডারী, সৈয়দ আহমদ আবরার হাসনাইন মাইজভাণ্ডারী, মাসুদ মাহমুদ, মাওলানা এস এম তানজীদ হোসাইন। পরে দরবারে পাকের আওলাদগণের সম্মিলিত কেন্দ্রিয় মিলাদ মাহ্িফল ও আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।