অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা গভীর ছাপ রেখে গেছে সেন্ট মার্টিনে। প্রবাল দ্বীপটির সর্বত্রই ছড়ানো ঝড়ের ক্ষতচিহ্ন। এখন সেই সব সারিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা। আমাদের টেকনাফ প্রতিনিধি জানান, ঘূর্ণিঝড়ের আঁচর লেগেছে দ্বীপের সবখানে। বিশেষ করে উত্তর পাশের সৈকত পাড়ে। তবে বহুতল ভবন, দালান, মোবাইল টাওয়ারগুলো অক্ষত রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তৈরীর কাজ করছে। স্থানীয় বোট মালিক সমিতির সভাপতি আবু তালেব বলেন, এবার বোট গুলো নিরাপদ দূরত্বে টেকনাফ সরিয়ে রাখা হয়েছিল। তাই ক্ষতি হয়নি। ডেইল পাড়ার মাহে আলম বলেন, ‘বাড়ির বাহিরের কিছু বেড়া নষ্ট হয়েছে। তবে একদম ঘরটি বিধ্বস্ত হয়নি।’ ইউপি সদস্য বলেন, বাড়ির একটি দেওয়াল ভেংগে গেছে। অন্যান্য অংশ ঠিক আছে।
গতকাল বিকেল সাড়ে ৪ টার সময় সেন্টমার্টিন বিএন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কথা হয় সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য সৈয়দ আলমের সাথে। তারা জানান, প্রবল ঝড়োহাওয়ায় সাধারণ বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানে শক্ত ধরনের বাড়ি ঘরের ব্যবস্থা করা দরকার। জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করতে টেকসই বেড়িবাঁধ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। ভাগ্য ভালো সরাসরি ঘূর্ণিঝড়টি সেন্টমার্টিনে আঘার করেনি।
এদিকে সোমবার বিকেলে কঙবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো: শাহীন ইমরান, পুলিশ সুপার মো: মাহফুজুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম, সেন্টমার্টিনের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তারা এসময় দ্বীপের মানুষ জনকে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন। এ সময় শত শত নারী পুরুষ সেন্টমার্টিনে স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ দেওয়ার দাবি জানান।
বিডিনিউজ জানায় : কঙবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, দ্বীপের মানুষকে প্রাথমিকভাবে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হবে। এরপর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে। ঘূর্ণিঝড়ের মূল আঘাতটি সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ওপর পড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, টেকনাফ উপজেলায়ও কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, টেকনাফের অন্যান্য উপকূলীয় এলাকায় ৩ হাজার ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে।
এদিকে বাংলানিউজ জানায়, গতকাল সকাল সাড়ে দশটার দিকে ৩৪ কিলোমিটারের জলপথে টেকনাফ থেকে মালামাল নিয়ে একটি ট্রলার সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। টেকনাফ থেকে এই নৌপথে স্পিডবোট চলাচলও শুরু হয়েছে।