সেনানিবাসের অভ্যন্তরে বর্তমানে বিদেশি মিশনের কোনো ব্যক্তি অবস্থান করছেন না বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী সংযোগ পরিদপ্তর– আইএসপিআর। গতকাল শনিবার রাতে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর বলেছে, ছাত্র–জনতার আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে ভারতীয় হাইকমিশনের অনুরোধে শুধু অসামরিক সদস্যদের ঢাকা সেনানিবাসসহ অন্যান্য সেনানিবাসে আশ্রয় প্রদান করা হয়। ‘বর্তমানে সেনানিবাসের অভ্যন্তরে বৈদেশিক মিশনসমূহের কোনো ব্যক্তিবর্গ অবস্থান করছেন না।’ খবর বিডিনিউজের।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হওয়ায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন বৈদেশিক মিশন নিরাপত্তা জোরদারের জন্য বারবার অনুরোধ করে বলে আইএসপিআর জানায়। ‘সে সময় পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতিতে একমাত্র সক্রিয় সেনাবাহিনীর নিকট তারা উক্ত নিরাপত্তা প্রদানের জন্য সহায়তা চায়। এ প্রেক্ষিতে, ঢাকায় অবস্থিত কূটনৈতিক এলাকা ও দূতাবাসের নিরাপত্তা বিধানে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়, যা বর্তমানে চলমান রয়েছে।’
কিছুসংখ্যক সদস্য নিজ নিজ কনস্যুলেট ভবনে এবং বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করায় সেসব স্থানগুলোতে নিরাপত্তা দেওয়া হয় জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত কিছুসংখ্যক রাশিয়ান বিশেষজ্ঞকেও নিরাপত্তা দেয় সেনাবাহিনী। এসব বিষয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সব তথ্য দেওয়া হয়েছে। গুজবে কান না দিয়ে সকলকে ধৈর্যশীল ও সহযোগী মনোভাব প্রদর্শন করার জন্য অনুরোধ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এর আগে ১৩ অগাস্ট রাজশাহী সেনানিবাসে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সেনাপ্রধান ওয়াকার–উজ–জামান বলেছিলেন, জীবন বিপন্ন হয়, ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে এমন কাউকে কাউকে তারা আশ্রয় দিয়েছেন। তবে তাদের বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে, মামলা হয়, অবশ্যই তারা শাস্তির আওতায় আসবেন। তিনি বলেছিলেন, যাদের ওপর হামলার হুমকি রয়েছে তাদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি। যে–ই হোক, যে দল–মতেরই হোক, যে ধর্মেরই হোক। সেটা আমরা করব। অবশ্যই আমরা চাইব না, বিচারবহির্ভূত কোনো অ্যাকশন তাদের ওপর হোক। তবে সেনানিবাসে বিদেশি মিশনগুলোর কোনো লোকজন নেই বলে এবার পরিষ্কার করে জানিয়ে দিল আইএসপিআর।
৫ অগাস্ট সরকারের পতনের পর অত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনে শীর্ষ পর্যায়ের বেশিরভাগ নেতা–মন্ত্রী ও এমপিরা। তারা কে কোথায় অবস্থান করছেন, তা নিয়ে অনেকের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে। এরই মধ্যে আত্মগোপনে থাকা সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ আরও কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।