মা-বাবারা কিশোর বয়সী সন্তানের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলুন। পর্যাপ্ত সময় কাটান। ঠান্ডা মেজাজে ওদের সব কথা শুনুন, ভালো-মন্দ আলোচনা করুন। কঠোর শাস্তি ও ভয় প্রদর্শন থেকে বিরত থাকুন। যাতে সন্তান আপনাকে মিথ্যা বলে বা কিছু গোপন করে। ওদের কাছে সবচেয়ে কাছের বন্ধু হিসাবে আস্থাভাজন হতে চেষ্টা করুন এবং নৈতিকতার শিক্ষা দিন। অবশ্যই নিজেও সৎ এবং নৈতিক হয়ে তবেই। নয়তো সন্তান আপনার কথা মান্য করবে না। প্রজন্মকে আশা ও আলোর পথ দেখাতে পারে পরিবার তথা বাবা-মা। অন্ধকারেও ঠিক পথ চেনে নেবে সন্তান, যদি বাবা-মা শতভাগ আদর্শ ও ন্যায়পরায়ণ হোন এবং সন্তানটিকে সেই শিক্ষা দেন। সন্তান জন্ম নেয়, সুসন্তান গড়ে তুলতে হয়। প্রতিটি সুসন্তানের পেছনে থাকে সুস্থ, সুন্দর পারিবারিক পরিবেশের এক অনবদ্য কাহিনী, যেখানে মা হলো মুখ্য । মা যদি যথাযথ ভাবে তার ভূমিকা পালন করতে না পারে তাহলে কাহিনী হয়ে যাবে নেতিবাচক। অনেকেই বলতে শুনি অমুকের ছেলে-মেয়ে কী ভাল! কী ভাগ্য তারা এমন ছেলে-মেয়ে পেয়েছে! তাদের কেন মনে হয় নিজের ছেলে-মেয়ে জন্মই নিয়েছে ভাল হবে না এই জিন নিয়ে? একবার ভাবুন তো ছোটবেলা থেকে আপনার বাচ্চা যখন বেড়ে উঠেছে ঘরে আপনি কি পরিবেশ রেখেছিলেন? কী রকম পরিবেশে বাচ্চাকে নিয়ে গেছেন, মিশতে দিয়েছেন? বাচ্চাদের অযাচিত বায়নাগুলো কিভাবে মোকাবেলা করেছেন? কোন্ প্রকারের শিক্ষা, নৈতিকতা, মূল্যবোধ, সততা শিখিয়েছেন? বাচ্চাদের সামনে আপনি আপনার বন্ধুটির, প্রতিবেশীর,ভিন্ন ধর্মের, ভিন্ন বর্ণের, গোত্রের লোকের সাথে কী রকম আচরণ করেছেন? আপনি যদি সন্তানের সামনে নিন্দা করেন, সমালোচনা করেন, অহেতুক হেয় করেন কাউকে, ধন-সম্পদ ও টাকা দিয়ে, পদমর্যাদা দিয়ে মানুষের মাপকাঠি হিসাবে বিবেচনা করেন আপনার সন্তান ও তাই শিখবে। বড় হয়ে সে ও আপনাকে তা দিয়ে মাপবে। সম্মান দিতে শিখবে না। আপনার শিক্ষা ও আচরণের প্রতিফলনই আপনার বড় হয়ে যাওয়া বাচ্চাটার স্বরূপ যা দেখে আপনি পরিতৃপ্ত হবেন অথবা কষ্ট পাবেন। তাই সুসন্তান তৈরি করতে আপনার তথা পিতা-মাতার ভূমিকা মুখ্য। সন্তানকে শৈশব থেকেই মানবিক ও নৈতিক শিক্ষায় গড়ে তুলুন পরিবার থেকেই। নারীদের শুধুমাত্র ভোগ ও মনোরঞ্জনকারী বিবেচনা না করে মানুষ ভাবতে শিক্ষা দিন ছেলেদের।তবেই সমাজ সুশৃঙ্খল হবে।