নগরীর বিভিন্ন খালের উপর একশ’ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে ৫৪টি নতুন ব্রিজ এবং কালভার্ট নির্মাণ করা হলেও খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সংকট থেকে মুক্তি জুটছে না। নগরীর পানি নিষ্কাশনে বাধা হয়ে উঠা ব্রিজ কালভার্টগুলো চার থেকে ছয় ফুট উঁচু করা হলেও নিচের খাল ভরাট থাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে। অবশ্য খালগুলোর খনন কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলে ব্রিজ উঁচু করার সুফল মিলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কবলে রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগরী। সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের বিসতৃত এলাকা ডুবে যায়। ঘরে বাড়িতে থৈ থৈ করে পানি। রাস্তাঘাট ডুবে যায়। নগরীর রাজপথে নৌকা চলার নজিরও ইতোমধ্যে স্থাপিত হয়েছে। জলাবদ্ধতা দূর করতে সিডিএ ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর খাল পুনঃখনন, সমপ্রসারণ ও সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ২০১৭ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের সমীক্ষা পরিচালনাকালে নগরীর জলাবদ্ধতার জন্য খাল নালা দখল বেদখলের পাশাপাশি খালের উপর স্থাপিত ব্রিজগুলোকেও দায়ী করা হয়। এসব ব্রিজের নিচ দিয়ে ওসাসার পাইপ লাইন রয়েছে। রয়েছে গ্যাসের পাইপ লাইন। ‘লো হাইটের’ এসব ব্রিজের নিচ দিয়ে বর্ষার পানি নিষ্কাশন চরমভাবে ব্যাহত হয়। বিষয়টি চিহ্নিত করে ওই প্রকল্পের আওতায় নগরীর ৩৬টি খাল সংস্কার, খনন এবং সম্প্রসারণ ছাড়াও এসব খালের উপর থাকা ৫৪টি ব্রিজ এবং কালভার্ট ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই সিদ্ধান্তের আলোকে প্রতিটি ব্রিজ এবং কালভার্ট ভেঙে নতুন করে চার থেকে ছয় ফুট উচু করে নির্মাণ করা হয়। ইতোমধ্যে ৫৪টি ব্রিজ কালভার্টের প্রত্যেকটিরই নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এর সুফল মিলছে না। নিচের খালগুলো ভরাট থাকায় পানি নিষ্কাশনে গতিশীলতা তৈরি হয়নি।
সূত্র বলেছে, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় খাল খনন এবং সংস্কারের কাজ চলছে। ৩৬টি খাল পুরোপুরি পরিস্কার করার পরই কেবল ব্রিজ কালভার্ট সংস্কারের সুফল মিলবে।
বিষয়টি নিয়ে সিডিএর প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ মঈনুদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৫৪টি ব্রিজ কালভার্ট নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। উঁচুও করা হয়েছে। এগুলোর প্রভাব অবশ্যই নগরীর জলাবদ্ধতার উপর পড়বে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, খালগুলোর তলদেশ দিয়ে শহরের পানি প্রবাহ অতীতের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তিনি প্রকল্পটির কাজ চলমান থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, ভবিষ্যতে খাল খনন এবং সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হলে পানি প্রবাহ আরো বাড়বে।