পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া এলাকায় লাগা আগুন ৩০ ঘণ্টা পরেও পুরোপুরি নেভেনি। তবে বনবিভাগের দাবি, আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। চার একর এলাকাজুড়ে আগুনের বিস্তৃতি ঘটে, স্থানটি আগামী দুই–তিন দিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবে বলে জানিয়েছে বনবিভাগ। তবে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত এবং বনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত তা এখনো বলতে পারেনি বনবিভাগ। খবর বিডিনিউজের। এর আগে শনিবার দুপুরে এই আগুন লাগার পরেই বনবিভাগ ও স্থানীয় গ্রামবাসী বনের আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। গতকাল রোববার সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ডসহ স্থানীয় গ্রামবাসী আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়।
গতকাল সকাল ৬টা থেকে ছয়টি ফায়ার পাম্পের মাধ্যমে রিলে সিস্টেমে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। তবে পাম্প বসানোর মতো কোনো জায়গা না থাকায় সেগুলো বসানো হয় সুন্দরবন সংলগ্ন খালে নৌকায়।
বনবিভাগের খুলনা বিভাগীয় বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, রোববার সকাল থেকে দিনভর তাপপ্রবাহের মধ্যে ভোলা ও শেওলা নদী থেকে পানি সংগ্রহ করে খুলনা ও বাগেরহাটের ফায়ার সার্ভিসের মোট পাঁচটি ইউনিট, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ডসহ স্থানীয় গ্রামবাসী।
তিনি জানান, দুপুর পর্যন্ত আমুরবুনিয়া এলাকায় অসংখ্য স্থানে আগুনের কুন্ডুলি, ধোঁয়া উড়তে দেখা গেলেও বিকালের দিকে ওইসব স্থানে আগুন নেই বললেই চলে। মাঝে–মধ্যে কিছু কিছু স্থানে ধোঁয়া দেখা গেছে।
এর মধ্যে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড প্রথম দিনের মতো আগুন নেভানোর কাজ সমাপ্তি ঘোষণা করেছে। তবে বনকর্মীরা তাদের নিজেদের পানির উৎস থেকে বনে ধোঁয়া উড়তে দেখলে তা নিভিয়ে ফেলতে কাজ চালিয়ে যাবেন। বনে লাগা আগুন যেহেতু ভূমির সমতল অংশ থেকে ছড়ায় সেজন্য আগামী আরও দুই–তিন দিন আগুন লাগার স্থান নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়, এটি একটি ‘বুশ ফায়ার’। প্রায় দুই বর্গকিলোমিটার এলাকায় বিভিন্ন অংশে বিচ্ছিন্নভাবে এখনো আগুন ছড়িয়ে আছে। এখনো ধোঁয়া বিদ্যমান আছে। জীবজন্তু এবং ঘন বনের জন্য শ্বাস–প্রশ্বাস স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করা যায় না।
অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রমে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ মোট ৫৫ জন এবং প্রায় ২৫০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত ছিলেন। অগ্নিনির্বাপণের জন্য পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থাও নেই। কিছু কিছু স্থানে পানির উৎস থেকে আগুনের দূরত্ব আড়াই কিলোমিটার। এছাড়া চলাচলের রাস্তাও দুর্গম। তাই ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন সরঞ্জাম হাতে করে বহন করে নির্ধারিত স্থানে নিতে হয়। পরে নৌকায় স্থাপন করে আগুন নেভানো হয়।
তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে জেলা প্রশাসন রাতে অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। আজ সোমবার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে ফের কার্যক্রম শুরু করা হবে। কিন্তু বনবিভাগ আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ চালিয়ে যাবে।