সামপ্রতিক সময়ে বেশ ছন্দে আছেন বাংলাদেশ নারী দলের পেসার মারুফা আক্তার। নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে দারুণ বোলিং করে আলোচনায় তিনি। অথচ মারুফার ক্রিকেটার হয়ে উঠে আসা অন্য আর দশজনের চেয়ে আলাদা। একটা সময় কৃষি কাজে বাবাকে সাহায্য করেছেন। শুধু সাহায্যই নয়, গরু ছিলনা বলে নিজেই লাঙ্গল টানতেন। সেই মারুফাই এখন ক্রিকেট বিশ্বে পরিচিত মুখ। শুধু পরিচিতই নয়, বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটাররা তার বল মোকাবেলা করতে হিমশিম খাচ্ছে। তার বোলিংয়ের ভিডিও শেয়ার করে প্রশংসা করেন কিংবদন্তি লাসিথ মালিঙ্গার মতো পেসার। কতটা সংগ্রাম করে ক্রিকেটে এসেছেন সেই গল্পই আইসিসিকে জানিয়েছেন মারুফা। একটা সময় গ্রামের মানুষজন তাদের খুব একটা সম্মানের চোখে দেখতো না। ঈদেও মারুফা থেকেছেন নতুন জামা ছাড়াই।
নিউজিল্যান্ড ম্যাচের আগে আইসিসির ডকুমেন্টারিতে মারুফাকে বলতে শোনা যায়, বিভিন্ন দাওয়াত থাকে না? এসব জায়গায় আমাদের ডাকত না। বলত ওদের ড্রেস নাই । এ কথা বলতে গিয়ে কান্না করেন মারুফা। একটা সময় ছিল যখন আমরা ঈদেও নতুন জামা কিনতে পারিনি। এ কথা বলতে গিয়েও কান্না করেন বাংলাদেশ দলের এই পেস বোলার। মারুফা আরও বলেন আমার বাবা একজন কৃষক। আমাদের সেরকম পয়সাকড়ি ছিল না। যে গ্রামে বড় হয়েছি তারাও তেমন সহযোগিতা করতো না। তবে মারুফার দিন বদলেছে। রংপুর বিভাগ থেকে উঠে আসা এ পেসার এখন প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেট বিশ্বে। বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং ইউনিটে মারুফা এক অপরিহার্য নাম। ক্রিকেটের সাথে যুক্ত হওয়ার পর পরিবারেও রাখছেন বড় অবদান। যা তৃপ্তি দেয় মারুফাকে। টাইগ্রেস এই পেসারের মতে আসলে এখন আমরা যেরকম অবস্থাতে এসেছি, অন্যরা এখন সেরকম জায়গায় নেই। আমি যেভাবে ফ্যামিলিকে সাপোর্ট করছি, অনেক ছেলেরাও হয়ত সেভাবে পারছে না। এটা অন্যরকম একটা শান্তি দেয়। ছোটবেলায় ভেবেছি মানুষ কবে আমাদের এভাবে দেখবে। হাততালি দিবে। যদিও এখন টিভিতে নিজেকে দেখলে লজ্জা লাগে । এ কথা বলতে গিয়ে হেসে দেন মারুফা। এই হাসি যে তৃপ্তির হাসি। এই হাসি মারুফার জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার হাসি। এই হাসি যতদিন অমলিন থাকবে ততদিন বাংলাদেশ উপকৃত হবে।