সুন্দর ও সম্ভাবনার সৈকত

পর্যটন স্পটে রূপান্তর করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে : উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা

বাঁশখালী প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ

বাঁশখালীর উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত দিন দিন সাধারণ পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। তাই প্রতিদিন সকালে অথবা বিকেলে অসংখ্য লোকের আনাগোনায় মুখরিত থাকে উপকূলীয় এলাকা। বিশেষ করে বাঁশখালীর খানখানাবাদ, বাহারছড়া, সরল ও ছনুয়া বঙ্গোপসাগর অংশে সারি সারি ঝাউবাগান যে কারো নজর কাড়ে। সবচেয়ে বেশী লোকের আনাগোনা হয় বাহারছড়া ও খানখানাবাদ কদমরসুল অংশে। এখন বেড়িবাঁধ জরাজীর্ণ থাকায় সাধারণ জনগণ এখানে তেমন যাতাযাত না করলে বর্তমানে বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকায় আধুনিক বেড়িবাঁধ করার পাশাপাশি সরকার উপকুলীয় এলাকা হয়ে মেরিন ড্রাইভ করার সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করায় উপকুল জুড়ে পর্যটন স্পটের দাবি জোরালো হয়েছে। বাঁশখালীর দীর্ঘ উপকূলীয় এলাকাকে পর্যটন স্পটে রূপান্তরিত করলে সরকার রাজস্বসহ বহুমুখী লাভবান হবে এমনকি কঙবাজারে যে পর্যটকদের চাপ তা থেকে চট্টগ্রামের পর্যটকরা বাঁশখালী অংশে এসে কঙবাজারের স্বাদ নিতে পারবে। বাঁশখালীর উপকূলীয় সুদীর্ঘ এলাকা জুড়ে সমুদ্র সৈকত বিস্তৃত। সারি সারি ঝাউবাগান ও বিস্তৃর্ণ সমুদ্র সৈকতের প্রাকৃতিক হাওয়া উপভোগ করতে এখানে প্রতিনিয়ত পর্যকটদের আনাগোনা দেখা যায়। বর্তমানে আনন্দ ভ্রমণ কিংবা পিকনিক স্পটের বিকল্প হিসেবেও পর্যটকরা বেছে নিয়েছে পর্যটন স্পটকে। বাঁশখালীর পূর্ব দিকে বিসতৃর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে পাহাড় এবং পশ্চিম দিকে রয়েছে বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী উপকূলীয় সুদূর প্রসারী সমুদ্রচর। এখানে রয়েছে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্পট। বর্তমানে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা প্রতিনিয়ত কঙবাজারের ন্যায় এখানে এসে ভিড় জমান। দিন দিন এখানে লোক সমাগম বৃদ্ধি পাওয়ায় যেখানে উপকুলের জনগন ঘর বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য নানাভাবে পদক্ষেপ নিয়েছিল, সেসব জনগণ এখন উপকুলে তাদের স্বপ্নের আবাসন গড়ছে নতুন নতুন কলোরবে। বাঁশখালীর গন্ডামারা উপকুলে বাংলাদেশে সরকারের সহযোগিতায় শীর্য স্থানীয় এস আলম ও চীন সরকারের যৌথ উদ্যোগে ১৩২০ মেগাওয়ার্ড এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তার উপর আবারো এখানো অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত করতে সকল পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু, মোরা ও আইলার মত অসংখ্য দুর্যোগের কবলে পড়ে বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকার বেশ কিছু ঝাউবাগান এবং প্যারাবন নষ্ট হয়ে যায়। সেগুলো পুনরায় সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করলে একদিকে উপকূলীয় বন বিভাগের কর্ম তৎপরতা বৃদ্ধি পাবে। অপরদিকে আগত পর্যটকদের প্রশান্তির জায়গা সৃষ্টি হবে। বাঁশখালীর ছনুয়া থেকে শুরু করে সরল, বাহারছড়া ও খানখানাবাদ এলাকার বিশাল সমুদ্র সৈকতে সারি সারি ঝাউবাগান যে কারো নজর কাড়ে। কিন্তু বঙ্গোপসাগরের অথৈ জলরাশি ঢেউয়ের তোড়ে প্রতিদিন ভেঙে পড়ছে ওই সব ঝাউবাগান।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী উপকূলীয় বনবিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, উপকূলকে পর্যটন স্পটে রূপান্তর এবং বিচ্ছিন্ন এলাকা জুড়ে ঝাউবাগান সৃষ্টির জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকাকে পর্যটন স্পট করার ব্যাপারে জানতে চাইলে বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকারের পৃষ্টপোষকতায় বাঁশখালীর উপকূলজুড়ে পর্যটন স্পটে রূপান্তর করার জন্য বাঁশখালীর সাংসদ আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বাঁশখালীর দীর্ঘ উপকুলীয় এলাকা সত্যিই ভালোলাগার মত। এটাকে পর্যটন স্পটে রুপান্তর করতে সরকারিভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান ।
বাঁশখালীর সাংসদ আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, বাঁশখালীবাসীর অভিশাপ ছিল উপকুলীয় বেড়িবাঁধ। সে অভিশাপ থেকে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় আধুনিক বেড়িবাঁধ করেছি। এখন উপকুলে মেরিন ড্রাইভ ও অর্থনৈতিক শিল্পাঞ্চল হবে। বাঁশখালীর উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত ছাড়াও বাঁশখালীতে রয়েছে আরো কয়েকটি মনোমুগ্ধকর পর্যটন স্পট। সেগুলো হল বাঁশখালী ইকোপার্ক, চা-বাগান উল্লেখযোগ্য।
বাঁশখালীর পর্যটন স্পট গুলোর মধ্যে শীলকূপে অবস্থিত ইকোপার্ক, পুকুরিয়ার চা-বাগান ও উপকূলীয় এই ঝাউবাগান বেষ্টিত সমুদ্র সৈকত উল্লেখযোগ্য। অথচ এসব পর্যটন স্পটগুলোর যথাযথ সংস্কার, তদারকি ও ভালভাবে যাতায়াত ব্যবস্থা করা হলে দেশের রাজস্ব আয়েও অন্যতম ভূমিকা রাখতে পারে পর্যটন স্পটগুলো। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অসংখ্য পর্যটকদের একটাই দাবি এসব পর্যটন স্পটগুলো যাতে অবিলম্বে সংস্কার করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে করোনায় একদিনে তিনজনের মৃত্যু, শনাক্ত ৭২৯
পরবর্তী নিবন্ধগরম কাপড়ের অভাবে কাউকে শীতের কষ্ট ভোগ করতে হবে না