সুইপিং কাজে গতি বেড়েছে চসিকের

সড়কে ধুলোবালি, ছিটানো হচ্ছে ৩০ হাজার লিটার পানি

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৩ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

গতি পেয়েছে নগরের বিভিন্ন সড়কের ধুলোবালি পরিষ্কারে গৃহীত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কার্যক্রমে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধুলোবালি পরিষ্কারে সংস্থাটি দৈনিক দুটি আধুনিক ভ্যাকুয়াম টাইপ ‘সুইপিং গাড়ি’ ব্যবহার করছে। একইসঙ্গে তিনটি পানিবাহী ভাউজার ও টেক্টর দিয়ে ছিটানো হচ্ছে ৩০ হাজার লিটার পানি।
গত ১৮ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এ কার্যক্রম। সর্বশেষ গতকাল সোমবার অক্সিজেন মোড় থেকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ সড়ক, ওয়াসা মোড় থেকে টাইগারপাস হয়ে বারিক বিল্ডিং নিমতলা পর্যন্ত অংশে ধুলোবালি পরিষ্কার ও পানি ছিটনো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার নিউমার্কেট থেকে কদমতলী আমবাগান হয়ে অলংকার মোড় এবং সিটি গেইট পোর্ট কানেকটিং রোড হয়ে নিমতলা পর্যন্ত পরিষ্কার করা হবে। আগামীকাল বুধবার নিমতলা হয়ে ফ্রি-পোর্ট, সিমেন্ট ক্রসিং হয়ে বিজয় নগর এয়ারপোর্ট এবং এয়ারপোর্ট হতে সী বিচ হয়ে কাটগড় মোড় ও সিমেন্ট ক্রসিং পর্যন্ত পরিষ্কার করা হবে।
এ বিষয়ে চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সুদীপ বসাক দৈনিক আজাদীকে বলেন, মানুষের কষ্ট লাঘবে ধুলোবালি পরিষ্কার কার্যক্রমকে জোরালো করেছি। শুষ্ক মৌসুম শুরু হয়েছে। এ সময় এমনিতেই ধুলোবালির প্রকোপ বাড়ে। আবার নগরের বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন কাজ চলছে। এতে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে ধুলোবালি বেড়েছে। তাই ধুলোবালি পরিষ্কার ও পানি ছিটানোর কার্যক্রমে গতি বাড়িয়েছি। প্রধান সড়ক ছাড়াও শহরের প্রতিটি সড়কেই এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ প্রকৌশলী বলেন, আমাদের তিনটি সুইপিং গাড়ি আছে। প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে দুইটি গাড়ি ব্যবহার করছি। পানির ভাউজার আছে তিনটি। যথাক্রমে এগুলোর পানি ধারণ ক্ষমতা হচ্ছে ১৪ হাজার, ১২ হাজার ও ৪ হাজার লিটার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ২০টি সুইপিং গাড়ি সংগ্রহ করেছিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। দেশের ১২টি সিটি কর্পোরেশনে এসব গাড়ি বিতরণ করা হয় ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এবং চসিককে তিনটি করে গাড়ি দেয়া হয়। ইতালি থেকে আনা গাগিুলোর একটির মাধ্যমে প্রতিবারে অন্তত ১২ কিলোমিটার সড়ক পরিষ্কার করা যায়। গাড়িতে থাকা পাইপের মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে ধুলোবালি-বর্জ্য তুলে নেওয়া হয়। একইসঙ্গে গাড়িতে থাকা ট্যাংকের মাধ্যমে পানি ছিটিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করা যায়। গাড়িগুলো চালানোর জন্য চসিকের তিনজন চালককে প্রশিক্ষণও দেয় মন্ত্রণালয়।
অবশ্য পূর্ব থেকেই তিনটি গাড়ি ছিল চসিকের। যেগুলো গত কয়েক বছরে একবারও ব্যবহার করা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না করায় গাড়িগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
নষ্ট পড়ে থাকা সুইপিং গাড়ি তিনটির দাম দুই কোটি ২৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ২০১০-২০১১ অর্থবছরে ৫০ লাখ ৩০ হাজার টাকায় একটি গাড়ি কেনা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ৮ জুন চসিককে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় বাকি দুটি সুইপিং গাড়ি দেয় চসিককে। এসব গাড়ির প্রতিটির মূল্য ৮৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
অভিযোগ আছে, প্রথমদিকে কিছুদিন এসব গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল। পরবর্তীতে গাড়িগুলোর তেমন একটি ব্যবহার হয় নি। এর কারণ হিসেবে প্রায় সময় চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলতেন, গাড়িগুলো বাংলাদেশে ব্যবহার উপযোগী নয়। গাড়িগুলো মসৃণ পিচঢালা সড়কের হালকা ধুলোবালি পরিষ্কার উপযোগী। কিন্তু চট্টগ্রামের সড়ক ও ফুটপাতে যেভাবে ধুলোবালির ভারী আবরণ পড়ে থাকে, গাড়িগুলো দিয়ে এসব পরিষ্কার কঠিন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চসিকের এক কর্মকর্তা বলেন, সুইপিংয়ের দুটি গাড়িতে আছে ডাবল ইঞ্জিন। একটি সাধারণ ট্রাকে ঘণ্টায় ১৫ লিটার ডিজেল প্রয়াজন হলেও সুইপিংয়ে লাগে ৩৫ থেকে ৪০ লিটার। অতিরিক্ত খরচের ভয়ে গাড়িগুলো চালানো হয় না। না চালাতে চালাতে গাড়িগুলোই নষ্ট হয়ে গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাম্বার পরিবারে নতুন অতিথি
পরবর্তী নিবন্ধবাকলিয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার