দীর্ঘ ৭ মাস পর শুরু হতে যাচ্ছে সাংস্কৃতিক চর্চা। ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে সবকিছু খুলে দেওয়া হলেও, বন্ধ ছিলো সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলো। আগামী ২৩ অক্টোবর থেকে সীমিত পরিসরে শিল্পকলা একাডেমি খুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে আবারও প্রাণ ফিরে পাবে দেশের সংস্কৃতি চর্চা। করোনা সংক্রমণ এড়াতে গত ১৮ মার্চ থেকে সারাদেশে নাট্যপ্রদর্শনী বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন। সেসঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া শিল্পকলা একাডেমির সব মিলনায়তন। এরপর থেকে শিল্পকলা একাডেমিতে কোনো নাট্য মঞ্চায়ন হয়নি। খবর বাংলানিউজের।
নাট্য মঞ্চায়ন না হলেও বন্ধ হওয়ার ৫ মাস পর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় শোকদিবসের অনুষ্ঠান। এরপর তিনটি প্রদর্শনীও হয়েছে একাডেমির চিত্রশালায়। তবে সেখানে জনসাধারণের অবাধ প্রবেশ ছিলো না। শিল্পকলায় নাট্য মঞ্চায়নের অনুমতি না মিললেও গত ২৮ আগস্ট রাজধানীর বেইলি রোডের মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে ‘লাল জমিন’ মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে শুরু হয় নাট্য প্রদর্শনী। সেখানে আরও মঞ্চস্থ হয় ১১ সেপ্টেম্বর জাগরণী থিয়েটারের ‘রাজার চিঠি’ এবং ২৫ সেপ্টেম্বর ব নাটুয়ার ‘নিশিকাব্য’ নাটক।
কাঁটাবনে নিজস্ব মহড়াকক্ষে নাট্যদল প্রাচ্যনাট আয়োজন করে উঠান নাটকের মেলা ‘মহলা মগন’। গত ৪ সেপ্টেম্বর শুরু হয় এ উৎসব। চলে মাসব্যাপী। প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় দর্শনীর বিনিময়ে ২০ জন দর্শক এখানে নাটক দেখেন। এসবের মধ্যেই শিল্পকলা একাডেমি খোলার বিষয়ে একাডেমি কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের নেতারা। সেখানেই সিদ্ধান্ত আসে, আগামী ২৩ অক্টোবর থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তন, পরীক্ষণ থিয়েটার হল এবং স্টুডিও থিয়েটার হল খোলার।
এ বিষয়ে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্পকলা একাডেমি খুলে দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে প্রতি শুক্রবার ও শনিবার খোলা থাকবে। সেখানে এক তৃতীয়াংশ আসনের ব্যবস্থা রাখা হবে। সেসঙ্গে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুসারে, করোনাকালে নাট্যদলগুলোর আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শিল্পকলা একাডেমি বিনামূল্যে বরাদ্দ দেওয়া হবে। এছাড়াও আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে চালু হবে শিল্পকলা একাডেমির মহড়া কক্ষ।
একাডেমি সূত্র জানায়, একাডেমির মিলনায়তন পুরোপুরি জীবাণুমুক্ত করার পাশাপাশি আগত দর্শকের শরীরের তাপমাত্রা মেপে হলে ভেতরে প্রবেশ করানো হবে। এছাড়া দর্শকের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হবে। এ বিষয়ে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, করোনার কারণে সারাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গণে স্থবিরতা বিরাজ করছিল। যদিও ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সংস্কৃতি চর্চা চলমান ছিলো। এখন সময় এসেছে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংস্কৃতি চর্চা শুরু করার। তিনি বলেন, করোনায় নিম্ন মৃত্যুহারের দিক দিয়ে বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম দেশ হওয়ার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।