ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডে কালুশাহ ওভারব্রিজের পূর্বে নিচের অংশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের রাস্তায় চলাচল করে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। ব্রিজের নিচে ড্রেনের পাশে ওই সওজ’র জায়গা ও রাস্তা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছিল সাইফুল হুদা জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যবসায়ী। রোববার সন্ধ্যায় স্থানীয় সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন আজিজসহ মেম্বারগণ চৌকিদারদের সঙ্গে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেন। তবে সাইফুল হুদা দাবি করেন ওই জায়গাটি তাদের নিজস্ব সম্পত্তি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ড্রেন নির্মাণ করার সময় তিন ফুট জায়গা ছেড়ে দিয়েছিলেন।
গতকাল সোমবার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কালুশাহ ওভারব্রিজের নীচে চট্টগ্রাম বন্দরে যাওয়ার রেলপথ রয়েছে। ব্রিজের পূর্বে একটি ৫ ফুটের ড্রেন রয়েছে। ড্রেনের পূর্ব পাশে সওজ’র জায়গায় পূর্ব থেকে থাকা সড়ক দিয়ে কালুশাহ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, আমেনা বিদ্যানিকেতন, ফকিরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ পূর্বপাশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠি চলাচল করে আসছে। চলাচলের একমাত্র পথও এটি। অনেকে ড্রেনের উপর দিয়েও হাটাচলা করে। ওই সওজ’র জায়গা ও চলাচলের রাস্তা দখল করে আরসিসি দ্বারা দেওয়াল নির্মাণ করছিলো। উক্ত রাস্তার নীচ দিয়ে ওয়াসা ও গ্যাসলাইনসহ সাম্প্রতিক তেলের পাইপ লাইন নিয়ে যাওয়ায় উক্ত রাস্তায় যেকোনো ধরনের খনন কাজ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া চলাচলের পথও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ সড়কের ড্রেনের উপর দিয়ে হাটা-চলা করছে।
স্থানীয় মেম্বার নজরুল ইসলাম বলেন, সওজ’র পরিত্যক্ত জায়গায় ও রাস্তা দিয়ে এলাকার বসতি ও স্কুুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে আসছে যুগযুগ ধরে। কিন্তু ব্যবসায়ী সাইফুল হুদা জাহাঙ্গীর সওজ’র জায়গা দখল করে কয়েকটি স্কেভেটর ডিপো স্থাপন করে তা ভাড়ায় দেন। পূর্ব থেকে সওজ’র জায়গায় থাকা চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার ফলে স্থানীয় মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়বে।
ছলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন আজিজ বলেন, দুই একরের অধিক সড়কের জায়গা দখল করা হয়েছে। সওজ’র জায়গায় চলাচলের রাস্তাও বন্ধ করে দেয়ার ফলে স্থানীয় বাসিন্দা ও স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ছে। পূর্বে থেকে সওজ’র জায়গায় থাকা রাস্তা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় আমরা গিয়ে বাঁধা দিয়ে এসেছি। দখলকারী যদি বৈধতা থাকে তাহলে সরকারি সার্ভেয়ার দ্বারা পরিমাপ করে তার জায়গা সে বুঝে নিতে পারে। এতে করে সে স্থাপনা নির্মাণ করলে কোনো সমস্যা থাকবে না। কিন্তু চলাচলের রাস্তা ও সওজ’র জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণের ফলে সমস্যা দেখা দেওয়ায় নির্মাণ কাজে বাঁধা দেওয়া হয়েছে।
ফেডারেল স্টিল লিমিটেডের মালিক সাইফুল হুদা জাহাঙ্গীর বলেন, সওজ’র জায়গা দখল করা হয়নি। ওভারব্রিজ যখন নির্মাণ করা হচ্ছিলো তথন ব্রিজের পূর্ব পাশে নীচে ড্রেন নির্মাণ করার সময় তিন ফুট জায়গা ছেড়ে দিয়েছিলাম। আমার নিজস্ব জায়গায় দেওয়াল নির্মাণ কাজ চলছে। স্থানীয় মেম্বার অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে নির্মাণ কাজে বাঁধা সৃষ্টি করছে। আমি ইউএনওকে বিষয়টি জানিয়েছি।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, অনুমোদন ছাড়া কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছিলো। কিন্তু ওই ব্যক্তি কোনো অনুমোদন না নিয়ে শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। পরিমাপ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের এসডিই নিজাম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সওজ’র জায়গা দখল করে স্থাপনা বা দেওয়াল নির্মাণের কোনো সুযোগ নাই। যদি প্রমাণিত হয় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।