ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড উপজেলা অংশ দিয়ে চলাচল করছে শুধু শত শত ত্রাণের গাড়ি আর ত্রাণের গাড়ি।
ভোর থেকে কোন দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে চট্টগ্রামের মিরসরাই বারইয়ারহাট হাট পর্যন্ত চয়েস পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস চলাচল করতে দেখা গেলেও ফেনী সহ অন্যান্য এলাকার যাত্রীবাহী পরিবহনের কোন বাস দেখা যায়নি। শুধু চলাচল করছে এখন বন্যাদুর্গতদের সহায়তায় রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক , মানবিক, সামাজিক ও বিভিন্ন সংগঠনগুলো এবং তাদের নিজ নিজ উদ্যোগে মিরসরাই জোরারগঞ্জ ও ফেনী জেলার লেমুয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনগুলো। এছাড়া মিরসরাই উপজেলার জোরালগঞ্জ দুর্গাপুর এলাকায় ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের উদ্দেশ্যে শুকনো খাওয়ার নিয়ে যাচ্ছেন সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন রাজনৈতিক,মানবিক,সাংস্কৃতিক ,সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। তার পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও দলবদ্ধভাবে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছেন ট্রাক ও বিভিন্ন যানে করে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড সরকারি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সায়েম সানি বলেন অত্র বিদ্যালয়ের ২০০৪ ও ২০১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সবাই মিলে ট্রাক ভাড়া করে বন্যাদুর্গত এলাকা মিরসরাই জোরারগঞ্জ ও বিভিন্ন স্পটে প্রাণ সামগ্রী শুকনো খাওয়ার বিতরণ করা হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে। এদিকে সীতাকুণ্ড আল- ইসরা দাওয়াহ একাডেমির পক্ষ থেকে জোরারগঞ্জ ও করের হাটের বিভিন্ন স্থানে তারা ত্রাণ সামগ্রী শুকনো খাওয়ার নিয়ে গেছেন ট্রাকে করে। এই একাডেমির মোহাম্মদ আরাফাত বলেন আমরা বন্যাদুর্গতদের কথা ভেবে আগামীকালও তার পরের দিনও আমরা সকলেই মিলে ট্রাকে করে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে যাব মিরসরাই ও ফেনী জেলার লেমুয়ার উদ্দেশ্যে । একই ভাবে সীতাকুণ্ড উপজেলার পৌরসভাস্থ পন্থিছীলা গ্রামের বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, আমরা নিজ উদ্যোগে রতন সেন, রাজন, অভি সহ মোট ৫ জন ফেনী জেলার লেমুয়ার উদ্দেশ্যে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে রওনা হয়েছি। একই ভাবে সীতাকুণ্ড ছোট দারোগারহাটের মোঃ মজিদ মাস্টার বলেন আমরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নেতৃত্বে ৭ জনের একটি গ্রুপ ফেনী জেলার লেমুয়া ও তিনটি এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছি। এছাড়া সীতাকুণ্ড উপজেলা থেকে অসংখ্য ত্রাণের গাড়ি বন্যা দুর্গতদের সাহায্যার্থে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে গাড়ি বোঝাই করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
সীতাকুণ্ড উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস মোস্তফা আলম সরকারের নেতৃত্বেও বন্যা দুর্গতদের শুকনো খাবার বিতরণের উদ্দেশ্যে ফেনী জেলার লেমুয়া এলাকাসহ বিভিন্ন স্পটে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করছেন।
এদিকে সকাল থেকে সীতাকুণ্ড পৌরসভাস্থ বাসস্ট্যান্ডের কোন বাস কাউন্টার খোলা দেখা যায়নি। সবগুলোই বন্ধ দেখা গেছে। দেখা যায়নি কোন দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসও। পুরো সড়ক জুড়ে দেখা গেছে শুধু ত্রাণের গাড়ি আর ত্রাণের গাড়ি। চট্টগ্রাম থেকেও সেই ভোর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে জোরারগঞ্জ সহ ফেনীর উদ্দেশ্যে অসংখ্য ত্রাণ সামগ্রী ট্রাকে বোঝাই করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এদিকে চয়েস পরিবহনের সুপার ভাইজার মোঃ হাসান বলেন আমরা শুধু মাত্র মিরসরাই উপজেলার জোরালগঞ্জ পর্যন্ত যাচ্ছি।
চট্টগ্রাম থেকে কোন দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। দূরপাল্লার বাস না থাকায় যাত্রীরা সিএনজি অটোরিক্সা(টেক্সি)ত যোগে সীতাকুণ্ড থেকে মিরসরাই জোরালগঞ্জ এলাকায় যেতে দেখা গেছে অনেক যাত্রীকে । এদিকে যাত্রী মনসুর আলম বলেন, আমরা ফেনী যাব। কিন্তু সড়কের তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও ফেনীর কোন গাড়ি পাওয়া যায়নি। ফেনী লালপোল এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে এবং পানিতে ডুবে যাওয়ায় ওখান দিয়ে গাড়ি চলাচল সমস্যা হচ্ছে । তবে শুধুমাত্র ফেনী লেমুয়া যাওয়ার জন্য ত্রাণের গাড়ি গুলোকে যাওয়ার জন্য ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন ওখানকার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক দল। তারা সকলেই রং সাইট দিয়ে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে ফেনী লেমুয়া যেতে হচ্ছে তাদের।