সিলেবাস জটিলতার ফাঁদে শিক্ষার্থীরা

শিউলী নাথ | বৃহস্পতিবার , ৯ জুন, ২০২২ at ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ

‘বাংলা না ইংরেজি সে প্রশ্ন থাক থাক/ সিলেবাস দেখে প্রাণ বাপ বাপ ছাড়ে ডাক’!- নচিকেতা চক্রবর্তীর ৩০ বছর আগে গাওয়া গানটি হঠাৎ শুনতেই মনে হলো- না না, করোনা পরবর্তী কালীন এই গানের সাথে আমাদের তেমন আর মিল নেই। বর্তমানে সিলেবাসকে যেমন সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে, তেমনি পাশের হারও বাড়তে শুরু করেছে। সেই সাথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে শিক্ষাব্যবস্থা আগের মত সচল করে শিক্ষাবর্ষের ধারাবাহিকতা কীভাবে বজায় রাখা যায়। খুবই ভালো উদ্যোগ। সংক্ষিপ্ত সিলেবাস পড়ে শিক্ষার্থীরা উত্তীর্ণ হচ্ছে বটে কিন্তু উচ্চ শিক্ষার জন্য কতটুকু জ্ঞানগর্ভ নিয়ে যেতে পারছে সেটাই জানার বিষয়।

যদিও সকল শিক্ষার্থী সম মেধাসম্পন্ন নয়। তবে যারা পড়ছে, তারা খুশি। কম সিলেবাস পড়ে মূল্যবান সার্টিফিকেট অর্জন করে নিচ্ছে। অন্য কোনো উপায় নেই বিধায় এই পদ্ধতি অবলম্বন করে আমরা হয়তো অচিরেই ধারাবাহিক শিক্ষাবর্ষে ফিরে আসব! এখন কথা হচ্ছে সিলেবাস প্রণয়নের আগে কর্তৃপক্ষ কি পাঠ্যবই এর উপর নজর রাখছেন? ২০২১ সালে ৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলা ২য় পত্র বইয়ের পরিবর্তন হয়েছে। বই পরিবর্তন মানেই সিলেবাস পরিবর্তন। ২০২২ সালে যারা এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে, তাদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস আগের ব্যাকরণ বই অনুযায়ী করা। কিন্তু ২০২৩ সালের পরীক্ষার্থীদের বলা হয়েছে ২০২২ এর এসএসসি পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুসরণ করতে। সেক্ষেত্রে ২০২২ সালের পরীক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস কী করে ২০২৩ সালের শিক্ষার্থীরা অনুসরণ করবে? অন্যান্য বিষয়ের সিলেবাস প্রায় ঠিক থাকলেও বাংলা ২য় পত্রের সিলেবাস নিয়ে এখনো শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকমহল উদ্বিগ্ন! ২০২১ সালে প্রণীত নতুন ব্যাকরণ বইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। সেক্ষেত্রে মানবণ্টনই বা কেমন হবে? কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।

শিক্ষাবোর্ড বা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে দেরি করছেন কেন তা ও বোঝা যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের একই প্রশ্ন, আমরা নতুন বইয়ে কী করে পুরানো বইয়ের সিলেবাস মিল পাব? শিক্ষকদেরও একই চিন্তা। সবমিলে অভিভাবকবৃন্দ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। যেহেতু জুন মাসেই প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষা ধার্য করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রশ্ন প্রণয়ন কর্মকর্তাগণ নিশ্চয়ই দ্রুত সমাধান দেবেন আশা করি। তবে কালক্ষেপণ যেন পরীক্ষার্থীদের জন্য হতাশা ও সংকট বয়ে না আনে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে! পরিশেষে নচিকেতা চক্রবর্তীর সাথে সুর মিলিয়ে বলতে পারি, ‘শিক্ষার আয়নায় সমাজকে চেনা যায়, সমাজ কি দেখে মুখ শিশুদের আয়নায়’?

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁচাও কিশোর, বাঁচাও দেশ
পরবর্তী নিবন্ধবিশ্ব ন্যাশ দিবস : প্রাসঙ্গিক ভাবনা