সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে রায়হান আহমদ (৩৪) নামের এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও ওই ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে আরও তিন পুলিশ সদস্যকে। গতকাল সোমবার বিকেলে মহানগর পুলিশ এ সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) জ্যোর্তিময় সরকার।
উল্লেখ্য, রায়হান নামের ওই যুবককে বন্দরবাজার থানা পুলিশ গত শনিবার বিকালে আটক করে। ওইদিন রাতে ফাঁড়িতে তার ওপর নির্যাতন চালায় পুলিশ এবং তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য টাকা দাবি করে। ভোরে অপরিচিত একটি মোবাইল থেকে ছেলের ফোন পায় রায়হানের বাবা। তাতে ওই ফাঁড়িতে তাকে আটকে রেখে ছেড়ে দেওয়ার জন্য টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে জানায় রায়হান। বাবাকে টাকা নিয়ে এসে তাকে উদ্ধারের অনুরোধও করে রায়হান। ছেলেকে বাঁচাতে ভোরে তার বাবা টাকা নিয়ে ওই ফাঁড়িতে গেলে তাকে জানানো হয় রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে, সকাল ১০টার দিকে আসতে হবে। পরে সকালে এলে তাকে বলা হয় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে যেতে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছে। এরপর মৃত ছেলের শরীরে নির্যাতনের ভয়াবহ চিহ্ন দেখতে পান তিনি। রায়হানের হাতের নখগুলোও ওপড়ানো ছিল। পুলিশ এরপর দাবি করে রায়হানকে ছিনতাইকারী সন্দেহ করে জনতা গণপিটুনি দেওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনের ফুটেজে এর কোনও প্রমাণ মেলেনি। রোববার সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে তার ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়। বিকেলে ৩টার দিকে ময়না তদন্ত শেষে নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এশার নামাজের পর জানাজা শেষে তার লাশ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। গতকাল সোমবার এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।
