সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় আদালতে দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ ইসমাঈলের আদালতে আজ সোমবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এ যুক্তিতর্ক চলে। আদালতে এই যুক্তিতর্ক আগামী ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
দিনের কার্যক্রম শেষে বাদীপক্ষের আইনজীবী সিনিয়র এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান জানিয়েছেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ষড়যন্ত্রমূলকভাবেই মেজর সিনহাকে হত্যা করেছে আসামিরা। ইতোমধ্যে ৬৫ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে বাদীপক্ষ তা আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী রানাদাশ গুপ্ত জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে ১৩ জন আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন। বাকি দুই আসামি পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপ কুমার দাশের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষ হওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষ ইচ্ছে করলে এ নিয়ে কিছু বলতে পারে। আর এর পরেই এই মামলা রায়ের দিকে চলে যাবে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আযহার আগের রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়ার এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে খুন হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান।
এ ঘটনার ৫ দিন পর ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি এবং টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ সহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারীরা কর্মকর্তা।
অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে একটি ‘পরিকল্পিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
গত বছরের ২৭ জুন ১৫ আসামির বিরুদ্ধে মামলাটির বিচারের জন্য অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর গত ২৩ আগস্ট থেকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমালের আদালতে স্বাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা শুরু হয়ে গত ১ ডিসেম্বর শেষ হয় যেখানে ৬৫ জন স্বাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।
সর্বশেষ গতকাল রবিবার আদালতে যুক্তিতর্ক পেশ শুরু হয়।