সিকদার গ্রুপের স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ

| মঙ্গলবার , ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

ন্যাশনাল ব্যাংকের কাছে বর্তমানে ভাড়ায় থাকা সিকদার গ্রুপের সমস্ত স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া দুদকের উপপরিচালক জি এম আহসানুলের করা একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

জব্দ হওয়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউয়ের ১২ কাঠা জমিতে ১৩তলা ভবন, জিগাতলার সীমান্ত স্কয়ার মার্কেটের তিনটি ফ্লোর, হাজারীবাগের সিকদার রিয়েল এস্টেট বিল্ডিং ও একটি সাততলা ভবনের তিন ফ্লোর, ধানমন্ডির জেড এইচ সিকদার উইমেন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বনানীর কামাল টাওয়ারের ১৮তলা ভবনের ৩ হাজার ৪০০ বর্গফুটের স্পেস, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে সিকদার শপিং কমপ্লেঙ, পটুয়াখালীর কলাপাড়া ইউনিয়নের একটি ছয়তলা ভবনের অংশ, বাগেরহাটের মোংলায় তিনতলা ভবনের নিচ তলায় ৩ হাজার বর্গফুটের স্পেস, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে তিন তলা ভবনের ৪ হাজার ২০০ বর্গফুটের স্পেস, শরীয়তপুরের মাধবপুরে জেড এইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবহৃত একটি ভবনসহ আরও বেশকিছু সম্পদ। খবর বাসসের।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নুল হক শিকদার ও ব্যাংকের সদস্যবৃন্দের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, নামেবেনামে জনগণের আমানতকৃত অর্থ লুটপাটসহ ঘুষের বিনিময়ে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ দেয়া ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়। অভিযোগ অনুসন্ধানকালে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড মালিকপক্ষ কর্তৃক জনগণের আমানতকৃত হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ প্রদান ও মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের তথ্য পাওয়া যায়। আত্মসাতকৃত অর্থ দিয়ে তারা নিজেদের, পরিবারের সদস্যদের ও নিকট আত্মীয়দের নামেবেনামে প্রচুর সহায়সম্পদ গড়ে তুলেছেন। মালিকপক্ষ প্রভাব খাটিয়ে অর্জিত সম্পদসমূহের মধ্যে কতিপয় সম্পদ ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন অফিস ভবন, এটিএম বুথসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার দেখিয়ে স্বাভাবিকভাবে ভাড়া আদায় করছেন।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায় যে, আদায়কৃত ভাড়ার টাকা সিকদার পরিবারের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকসমূহ যেমনরন হক সিকদারের মালিকানাধীন আর এন্ড আর হোল্ডিংস লি., মাল্টিপেঙ হোল্ডিংস লি. ও পাওয়ারপ্যাক ইকোনমিক জোন, পারভীন হক সিকদারের স্বামী সালাউদ্দিন খান, মনোয়ারা হক সিকদার ও তার মালিকানাধীন সিকদার রিয়েল এস্টেট লি. এবং নাসিক হক সিকদারের নামে ন্যাশনাল ব্যাংক লি. এর ব্যাংক হিসাবগুলোতে নিয়মিত জমা হচ্ছে।

আবেদনে বলা হয়েছে, মালিকপক্ষের বেশিরভাগ সদস্য বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ক্ষমতা প্রদানের মাধ্যমে অর্জিত অপরাধলব্ধ স্থাবর সম্পদগুলো বিক্রি বা স্থানান্তরের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যেহেতু স্থাবর সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ও রাষ্ট্রের সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে সেহেতু স্থাবর সম্পদগুলো অবিলম্বে ক্রোক করা আবশ্যক বলে দুদক মনে করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচকবাজার ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ফেনী থেকে গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধভারত থেকে চালের প্রথম চালান আসছে কাল