চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন ও সুরক্ষা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভায় বক্তারা নয়নাভিরাম সিআরবিতে বেসরকারি উদ্যোগে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ নির্মাণ পরিকল্পনা নগরীর প্রাকৃতিক নৈসর্গ ও সৌন্দর্য্যহানির ফাঁদ হিসেবে অভিহিত করেছেন। চট্টগ্রাম রেলওয়ের ৫০ শয্যাবিশিষ্ট বক্ষ ব্যাধি ও ৫০ সাধারণ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে। এ হাসপাতালটিকে বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে গড়ে না তুলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ নির্মাণের পাঁয়তারা মেনে নেয়া যায় না। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সিটি মাস্টার প্ল্যান ২০০৯ সালের অনুচ্ছেদ ডিপিএল-০৩ সিএইচ-০৩-০৮ তে বলা হয়- সিআরবি’র ভূ-প্রাকৃতিক উন্মুক্ত স্থানকে কোনভাবে পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করা যাবে না। ঐতিহাসিক স্থানের আশপাশে যে সকল নতুন স্থাপনা করা হয়েছে সেগুলোকে অপসারণ করে পর্যটন বান্ধব করতে হবে। আশপাশের বস্তি ও কাঁচা ঘরকে স্থানান্তর করতে হবে। বর্তমান স্থিত যে হাসপাতালটি আছে সেটির ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে হবে। কিন্তু কোন ধরনের সম্প্রসারণ করা যাবে না। বাণিজ্যিক ও আবাসিক কোন স্থাপনা করা যাবে না। এরই আলোকে সভায় সিদ্ধান্ত হয়- মাস্টার প্ল্যানের অনুলিপি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, মেয়র, চউক ও পরিবেশ অধিদপ্তরে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করা হবে। সভায় আরো বলা হয়, হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় অনেক বড় বড় বেসরকারি বিনিয়োগকারীকে নামমাত্র মূল্যে জায়গা দিয়েছিল সাধারণ মানুষের সুলভে চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তির শর্ত সাপেক্ষে। কিন্তু কার্যত দেখা গেছে- হাসপাতালগুলো বাণিজ্যিক শ্রীবৃদ্ধির স্বার্থে ধনীদের চিকিৎসা কেন্দ্র হলেও সাধারণের চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তির সুযোগ নেই। তাই সঙ্গত কারণে প্রতিয়মান হয় যে- রেলওয়ে সিআরবি’র নান্দনিক স্থানে সেই ধরনের হাসপাতাল নির্মাণ স্বাস্থ্যসেবার নামে লুন্ঠনবৃত্তির অপপ্রয়াস। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে সচিবের দপ্তরে পরিবেশ উন্নয়ন ও সুরক্ষা স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের সভাপতিত্বে উক্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চালনায় স্থায়ী কমিটির সভায় বক্তব্য রাখেন কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী, মো.শফিকুল ইসলাম, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রুমকী সেনগুপ্ত, ফেরদৌসি আকবর ও নগর পরিকল্পনাবিদ আব্দুল্লাহ আল ওমর।