সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনে তৃপ্তির হাসি

সীতাকুণ্ডে কৃষকের বাজার

লিটন কুমার চৌধুরী, সীতাকুণ্ড | মঙ্গলবার , ৫ নভেম্বর, ২০২৪ at ৯:৪৬ পূর্বাহ্ণ

উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কৃষকের বাজারে পণ্য কিনতে এসেছিলেন হতদরিদ্র সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাক নাসির উদ্দিন। তিনি বাজার ঘুরে সবজি, ডিমের পাশাপাশি কিনেছেন বেশ কয়েকটি পণ্য। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে পেরে তৃপ্তির হাসি ফুটেছে তার মুখে।

শুধু নাসির উদ্দিন নন, সম্প্রতি চালু হওয়া এ কৃষকের বাজার থেকে সাশ্রয়ী দামে পণ্য কিনতে পেরে আত্মতৃপ্তির হাসি ফুটে উঠেছে উপজেলার পৌর সদরসহ বিভিন্ন এলাকার সাধারণ জনগণের মুখে।

অটোরিকশা চালক নাসির উদ্দিন জানান, তিনি ভাড়ায় চালিত অটোরিকশা চালান। দিন শেষে যা উপার্জন হয় তা থেকে মালিকের ৪৫০ টাকা জমা দেওয়ার পর হাতে আর তেমন টাকা থাকে না। উপার্জন কম হওয়াতে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে যাওয়া পণ্যের দামের কারণে অর্থাভাবে পরিবারপরিজন নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটছে।

তিনি বলেন, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে কৃষকের বাজার বসিয়ে উপজেলা প্রশাসন যেভাবে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি করছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আয়োজকেরা জানান, সাধারণ জনগণের কিছুটা দুর্দশা লাঘবে সীতাকুণ্ড পৌরসভার মুখে এ কৃষকের বাজার বসিয়েছেন তারা। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বসানো এ বাজারের সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়। পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ বাজার বসবে।

দেখা গেছে, কৃষকের বাজারে বরকটি ৫৫, ঝিঙে ৫৫, ঢ্যাঁড়স ৫৫, লাউ (বড়) ৫৫ ও লাউ (ছোট) ৫০, মিষ্টি কুমড়ো প্রতিটি ৮০ (২ থেকে ৩ কেজি), লাল শাক ২০, কাঁকরোল ৭০ ও ডিম ১ ডজন ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বাজারে আসা ক্রেতা মিলন দাস বলেন, পরিবারের জন্য দুই বেলা দুমুঠো খাবারের জোগাড় করা অনেকটাই দুরূহ হয়ে পড়েছে। সিন্ডিকেটের এ বাজারে উপজেলা প্রশাসনের কৃষকের বাজার চালুর এ উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এ বাজার থেকে সাধ্যমতো দামে পণ্য কিনতে পেরে আনন্দিত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষকের বাজারে স্বল্পমূল্যে জনসাধারণের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ও সবজি বিক্রয় করা হচ্ছে। সরাসরি পাইকারি দামে কৃষকের পণ্য এখানে বিক্রি করা হচ্ছে। এ কারণে এখানে নেই কোনো সিন্ডিকেট। তিনি আরও বলেন, ব্যতিক্রমী কৃষকের এই বাজারে পণ্য বিক্রি করে একদিকে যেমন কৃষক লাভবান হচ্ছেন অন্যদিকে সাধ্যানুযায়ী দামে পণ্য কিনতে পেরে স্বস্তিতে সাধারণ জনগণ। সব শ্রেণিপেশার মানুষের কাছে দারুণ সাড়া ফেলা এ কৃষকের বাজার পণ্যের দাম না কমা পর্যন্ত চলমান থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় পমার শিক্ষার্থী সংলাপ
পরবর্তী নিবন্ধমুসলিম সভ্যতার পুনর্জাগরণে বিশ্ব মুসলমানকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে