চকরিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কথা কাটাকাটির ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে সালিশ চলাকালে হঠাৎ পিঠে ছুরিকাঘাত করলে আনোয়ার হোসেন (৪০) নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়। এ সময় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। তবে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আনোয়ার হোসেনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার রাত দেড়টার দিকে মৃত্যু হয় তার।
এর আগে গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের দরবেশ কাটাস্থ উত্তর পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তখন সেখানে ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) সুলতান মাহমুদ সালিশ বসায় উভয়পক্ষের লোকজনকে নিয়ে। নিহত আনোয়ার হোসেন একই এলাকার আবু তাহের লেদুর ছেলে। বর্তমানে সংসারে স্ত্রী, পাঁচ বছরের ছেলে এবং ১৪ বছরের মেয়ে সন্তান রয়েছে। স্থানীয়রা জানান– কয়েকমাস আগে স্থানীয় নাসির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি নিহত আনোয়ারের স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। এর কারণ জিজ্ঞেস করতে চাইলে নাসির উদ্দিন কামড় দেয় আনোয়ারকে। এর পর স্থানীয় মেম্বার সুলতান মাহমুদকে অভিযোগ করলে পরবর্তীতে নাসিরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে মেম্বার। তবে সেই জরিমানার ঘটনা নিয়ে আয়াজ নামের আরেক স্থানীয় যুবক ‘এক কামড়ে ১০ হাজার টাকা’ এই ধরণের কথা বলে আনোয়ারকে উস্কানিমূলক কথা বলে ক্ষেপিয়ে তুলে। এই ক্ষেপানোর ঘটনায় আনোয়ার নতুন করে অভিযোগ দেন স্থানীয় মেম্বারের কাছে।
স্থানীয়রা আরও জানান– সেই অভিযোগের সুরাহা করতে উভয়পক্ষকে নিয়ে শনিবার রাতে উত্তর পাড়ায় একটি কামারের দোকানের সামনে সালিশ বসানো হয়। সেই সালিশ চলাকালে হঠাৎ আয়াজ তার কোমড় থেকে ছুরি বের করে পিঠে আঘাত করে আনোয়ার হোসেনকে। এর পর আনোয়ার মারা যায়। ছুরিকাঘাতকারী মোহাম্মদ আয়াজ একই এলাকার এনামুল হকের ছেলে। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই আয়াজ পেছন থেকে আনোয়ারকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে। এর পর আয়াজ সালিশ থেকে পালিয়ে যায়।
চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুল জব্বার বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার এবং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কঙবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত আয়াজকে আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।