সামিটের আজিজ খান ও স্ত্রী-সন্তানের সম্পদ বিবরণী চেয়েছে দুদক

| সোমবার , ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ

সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আজিজ খান ও মেয়ে আয়েশা আজিজ খানের সম্পদের বিবরণী চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনদুদক। তাদের দাখিল করা আয়কর নথিতে সম্পদের যে পরিমাণ দেখানো হয়েছে তা ঘোষিত আয়ের সঙ্গে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ হওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছে সংস্থা। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল রোববার দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য দিয়ে বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪এর ২৬() ধারা অনুযায়ী তাদের প্রত্যেকের নামে পৃথক পৃথক তিনটি সম্পদ বিবরণী নোটিস জারি এবং সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।’

অনুসন্ধানের বরাতে দুদক বলছে, আজিজ খানের নামে ৩৩০ কোটি ৯৩ লাখ ৫০ হাজার ১০৯ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানকালে তার নামে কোনো দায়দেনার তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে আয়কর নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তিনি সেখানে কোনো স্থাবর সম্পদের তথ্য দেননি, যা দুদকের মতে ‘স্পষ্টতই অসামঞ্জস্যপূর্ণ’।

দুদক বলছে, অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, আজিজ খান দেশের অর্থ সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে ‘পাচারের’ মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। অথচ আয়কর নথিতে তিনি ‘অত্যন্ত কম পরিমাণ’ সম্পদ প্রদর্শন করেছেন, যা তার ঘোষিত আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

সংস্থা বলছে, অনুসন্ধানে আজিজ খানের স্ত্রী আঞ্জুমান আজিজ খানের নামে ৯২ কোটি ৬২ লাখ ৭৮ হাজার ৭৯ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তার ক্ষেত্রেও কোনো দায়দেনার তথ্য পাওয়া যায়নি। আয়কর নথিতে তিনি যে পরিমাণ স্থাবর সম্পদের মূল্য দেখিয়েছেন, প্রকৃত মূল্য তার চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। পাশাপাশি, এসব সম্পদও তার আয়ের সঙ্গে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ বলে দাবি করছে দুদক।

এছাড়া, তাদের মেয়ে আয়েশা আজিজ খানের নামে ২৮৭ কোটি ৪৩ লাখ ২২ হাজার ৯৬৪ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়ার কথা তুলে ধরে দুদক বলেছেন, আয়কর নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, তার প্রদর্শিত স্থাবর সম্পদের মূল্য প্রকৃত মূল্যের তুলনায় অনেক কম দেখানো হয়েছে। এসব সম্পদ তার আয়ের সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’ বলে সংস্থার অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়েছে।

গত ৫ অগাস্ট অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গোপালগঞ্জ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ফারুক খানের ভাই সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান আলোচনায় আসেন। এরপর গেল ৭ অক্টোবর সামিটের আজিজ খানসহ পরিবারের ১১ সদস্যের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) তাদের সবার ব্যাংক হিসাব ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখতে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয়।

চিঠিতে সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আজিজ খান, তিন মেয়ে আয়েশা আজিজ খান, আদিবা আজিজ খান ও আজিজা আজিজ খান, চার ভাই ফারুক খান, ফরিদ খান, লতিফ খান ও জাফর উম্মেদ খান এবং ভাইদের ছেলে ফয়সাল করিম খান ও সালমান খানের নাম ও এনআইডি নম্বর দেওয়া হয়। তারা সবাই সামিট গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির পরিচালক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবুদ্ধিজীবী হত্যা ‘ভারতীয় সেনাবাহিনীর ষড়যন্ত্রের অংশ’: গোলাম পরওয়ার
পরবর্তী নিবন্ধঅরক্ষিত বধ্যভূমিগুলো সুরক্ষিত করবে চসিক : মেয়র