সাবেক এমপিদের বিলাসবহুল গাড়িসহ শতাধিক গাড়ির নিলাম আগামী সপ্তাহে

জাহেদুল কবির | বৃহস্পতিবার , ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:০২ পূর্বাহ্ণ

শুল্কমুক্ত সুবিধায় পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সংসদ সদস্যদের (এমপি) আনা বিলাসবহুল ৩১ ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি নিলামে উঠছে আগামী সপ্তাহে। চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতিটি গাড়ির দাম নির্ধারণ করেছে ৯ লাখ ৬৭ লাখ টাকা। নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতাদের অনূকুলে এসব গাড়ির বিক্রয় অনুমোদন দেয়া হবে। এমপিদের গাড়ি ছাড়াও চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আরো ৭০ গাড়ি নিলামে তোলা হবে। এসব গাড়ির দাম নির্ধারণ করার জন্য শুল্কায়ন শাখায় পাঠানো হয়েছে। গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে১৩টি হেভেল, একটি রেভফোর, ৫টি হ্যারিয়ার, ৩টি নোহা, ৩টি প্রিমিও, ১০টি ড্রাম ট্রাক, ৩০টি মিক্সচার ট্রাক, ৩টি স্কয়ার ও ওসাকা ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি রয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা গাড়ি খালাস আটকে যায়। এমন পরিস্থিতিতে গাড়িগুলোর বিষয়ে মতামত চেয়ে গত ২১ আগস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে চিঠি পাঠায় চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এনবিআর গত ৮ ডিসেম্বর সেই চিঠির জবাবে উল্লেখ করেসাবেক এমপিদের গাড়িগুলো স্বাভাবিক শুল্ককর পরিশোধ করেই খালাস নিতে হবে। এজন্য আমদানিকারকদের গাড়ি খালাস নেয়ার জন্য ১৫ দিন সময় বেঁধে দেয় কাস্টমস। সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় অবশেষে নিলামে তোলা হচ্ছে গাড়িগুলো। একইসাথে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৭০টি গাড়িও নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা সাবেক এমপিদের ৩১টি গাড়ি নিলামে তোলা সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া একইসাথে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আরো ৭০টি গাড়িও তোলা হচ্ছে। নিলামের স্থায়ী আদেশমতে, প্রথমবার কোনো পণ্যের নিলামে তোলা হলে সেই পণ্যের ভিত্তিমূল্যের ৬০ শতাংশ দর উঠতে হবে। তখনই বিক্রয় অনুমোদন দেয়া যাবে। না হলে দ্বিতীয়বার নিলামে তুলতে হবে। সাবেক এমপিদের গাড়িগুলোর ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা করে। বাকি গাড়িগুলোর এখনো দাম নির্ধারণের কাজ চলমান রয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে আগামী সপ্তাহে নিলামে তোলা।

উল্লেখ্য, বর্তমানে যাদের গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে আছে, তারা হলেনপিরোজপুর২ এর সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ, ময়মনসিংহ৭ এর এবিএম আনিসুজ্জামান, বগুরা৫ এর মোহাম্মদ মজিবুর রহমান, সিরাজগঞ্জ২ আসনের সাবেক এমপি জিন্নাত আরা হেনরি, সুনামগঞ্জ১ এর রনজিত চন্দ্র সরকার, নেত্রকোনা৪ এর সাবেক এমপি সাজ্জাদুল হাসান, গাইবান্ধা২ এর শাহ সারোয়ার কবির, ব্রাহ্মনবাড়িয়া১ এর এসএকে একরামুজ্জামান, চট্টগ্রাম(সীতাকুণ্ড) এর সাবেক এমপি এসএম আল মামুন, খুলনা৩ এর এসএম কামাল হোসাইন, চট্টগ্রাম১৬ (বাঁশখালী) এর মুজিবুর রহমান, নওগাঁ৩ এর সুরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, সংরক্ষিত নারী আসন১৩ এর সাবেক এমপি অভিনেত্রী তারানা হালিম, ঝিনাইদহ২ এর নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, জামালপুর৫ এর আবুল কালাম আজাদ, সুনামগঞ্জ৪ এর মুহাম্মদ সিদ্দিক, চট্টগ্রাম১৫ এর আবদুল মোতালেব, সংরক্ষিত নারী আসন১৪ এর শাম্মী আহমেদ, ময়মনসিংহ১১ এর আবদুল ওয়াহেদ, সংরক্ষিত নারী আসন ১২এর রুনা রেজা, যশোর২ এর তৌহিদুজ্জামান, টাঙ্গাইল৮ আসনের অনুপম শাহজাহান জয়, নিলফামারী৩ এর সাদ্দাম হোসাইন পাভেল ও সংরক্ষিত নারী আসন৩৫ ফরিদা ইয়াসমিন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচটপটির দোকান ও রেস্তোরাঁর বিপরীতে ২৩৪ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ : অনুসন্ধানে দুদক
পরবর্তী নিবন্ধমহেশখালীতে সন্ত্রাসী হামলায় যুবক নিহত