শুল্কমুক্ত সুবিধায় পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সংসদ সদস্যদের (এমপি) আনা বিলাসবহুল ৩১ ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি নিলামে উঠছে আগামী সপ্তাহে। চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতিটি গাড়ির দাম নির্ধারণ করেছে ৯ লাখ ৬৭ লাখ টাকা। নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতাদের অনূকুলে এসব গাড়ির বিক্রয় অনুমোদন দেয়া হবে। এমপিদের গাড়ি ছাড়াও চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আরো ৭০ গাড়ি নিলামে তোলা হবে। এসব গাড়ির দাম নির্ধারণ করার জন্য শুল্কায়ন শাখায় পাঠানো হয়েছে। গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে–১৩টি হেভেল, একটি রেভফোর, ৫টি হ্যারিয়ার, ৩টি নোহা, ৩টি প্রিমিও, ১০টি ড্রাম ট্রাক, ৩০টি মিক্সচার ট্রাক, ৩টি স্কয়ার ও ওসাকা ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি রয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা গাড়ি খালাস আটকে যায়। এমন পরিস্থিতিতে গাড়িগুলোর বিষয়ে মতামত চেয়ে গত ২১ আগস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে চিঠি পাঠায় চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এনবিআর গত ৮ ডিসেম্বর সেই চিঠির জবাবে উল্লেখ করে–সাবেক এমপিদের গাড়িগুলো স্বাভাবিক শুল্ককর পরিশোধ করেই খালাস নিতে হবে। এজন্য আমদানিকারকদের গাড়ি খালাস নেয়ার জন্য ১৫ দিন সময় বেঁধে দেয় কাস্টমস। সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় অবশেষে নিলামে তোলা হচ্ছে গাড়িগুলো। একইসাথে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৭০টি গাড়িও নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা সাবেক এমপিদের ৩১টি গাড়ি নিলামে তোলা সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া একইসাথে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আরো ৭০টি গাড়িও তোলা হচ্ছে। নিলামের স্থায়ী আদেশমতে, প্রথমবার কোনো পণ্যের নিলামে তোলা হলে সেই পণ্যের ভিত্তিমূল্যের ৬০ শতাংশ দর উঠতে হবে। তখনই বিক্রয় অনুমোদন দেয়া যাবে। না হলে দ্বিতীয়বার নিলামে তুলতে হবে। সাবেক এমপিদের গাড়িগুলোর ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে–৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা করে। বাকি গাড়িগুলোর এখনো দাম নির্ধারণের কাজ চলমান রয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে আগামী সপ্তাহে নিলামে তোলা।
উল্লেখ্য, বর্তমানে যাদের গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে আছে, তারা হলেন–পিরোজপুর–২ এর সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ, ময়মনসিংহ–৭ এর এবিএম আনিসুজ্জামান, বগুরা–৫ এর মোহাম্মদ মজিবুর রহমান, সিরাজগঞ্জ–২ আসনের সাবেক এমপি জিন্নাত আরা হেনরি, সুনামগঞ্জ–১ এর রনজিত চন্দ্র সরকার, নেত্রকোনা–৪ এর সাবেক এমপি সাজ্জাদুল হাসান, গাইবান্ধা–২ এর শাহ সারোয়ার কবির, ব্রাহ্মনবাড়িয়া–১ এর এসএকে একরামুজ্জামান, চট্টগ্রাম–৪ (সীতাকুণ্ড) এর সাবেক এমপি এসএম আল মামুন, খুলনা–৩ এর এসএম কামাল হোসাইন, চট্টগ্রাম–১৬ (বাঁশখালী) এর মুজিবুর রহমান, নওগাঁ–৩ এর সুরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, সংরক্ষিত নারী আসন–১৩ এর সাবেক এমপি অভিনেত্রী তারানা হালিম, ঝিনাইদহ–২ এর নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, জামালপুর–৫ এর আবুল কালাম আজাদ, সুনামগঞ্জ–৪ এর মুহাম্মদ সিদ্দিক, চট্টগ্রাম–১৫ এর আবদুল মোতালেব, সংরক্ষিত নারী আসন–১৪ এর শাম্মী আহমেদ, ময়মনসিংহ–১১ এর আবদুল ওয়াহেদ, সংরক্ষিত নারী আসন ১২– এর রুনা রেজা, যশোর–২ এর তৌহিদুজ্জামান, টাঙ্গাইল–৮ আসনের অনুপম শাহজাহান জয়, নিলফামারী–৩ এর সাদ্দাম হোসাইন পাভেল ও সংরক্ষিত নারী আসন–৩৫ ফরিদা ইয়াসমিন।