রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে পাঁচটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় তার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রামের পৃথক তিনটি আদালত গ্রেপ্তার দেখানোর এ আদেশ ও রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রিজন ভ্যানে করে ফজলে করিমকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আদালতের কার্যক্রম শেষে একইভাবে তাকে জেলা পুলিশের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় উৎসুক জনতা তার দিকে তেড়ে যায় এবং ডিম ছুড়ে মারে। নতুন আদালত ভবনের নিচে থাকা বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত ন্যায়কুঞ্জের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ থাকায় ডিম তার গায়ে পড়েনি।
জেলা পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক (প্রসিকিউশন) জাকির হোসেন আজাদীকে বলেন, রাউজান থানার দুটি মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ চেয়ে আবেদন করা হলে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হারুন গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন। একটি মামলায় তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন জানানো হলে বিচারক দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তিনি বলেন, কারাগারে ফজলে করিম চৌধুরীর ডিভিশন চেয়ে ও তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা চেয়ে তার আইনজীবী পৃথক আবেদন করেন। শুনানি শেষে জেল কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিচারক নির্দেশ দেন।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) এ এ এম হুমায়ুন কবির আজাদীকে বলেন, চকবাজার ও পাঁচলাইশ থানার দুটি মামলায় আবেদনের প্রেক্ষিতে সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার। এছাড়া চান্দগাঁও থানার পৃথক একটি মামলাতেও আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ হয়। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিক এ আদেশ দেন।
তিনি বলেন, আদালত পাড়ায় কড়া নিরাপত্তা ছিল। কোনো সমস্যা হয়নি। সরকার পতন পরবর্তী গত ১২ সেপ্টেম্বর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া সীমান্ত এলাকা থেকে ফজলে করিমকে গ্রেপ্তার করে বিজিবি। এরপর ভারতে অনুপ্রবেশ চেষ্টার মামলা দিয়ে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে উপস্থাপন করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর থেকে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে ছিলেন। ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।
উল্লেখ্য, সরকার পতনের পর এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাউজানসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় অন্তত দশটি মামলা হয়েছে। সর্বশেষ গত সোমবার চট্টগ্রাম আদালতে ইসলাম মিয়া নামে এক ব্যক্তি মামলা দায়ের করেছেন। তিনি পূর্ব রাউজানের বাসিন্দা। মামলায় ফজলে করিমের পাশাপাশি তার দুই ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরী ও ফারহান করিম চৌধুরীকেও আসামি করা হয়েছে। অস্ত্রের মুখে রাউজান সাব রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে গিয়ে জমি রেজিস্ট্রি নেওয়ার অভিযোগে মামলাটি করা হয়।