ক’দিন আগেই মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল সাফল্য নিয়ে এসেছে। সে সাফল্যকে আরো লম্বা করতে তাদের সামনে এসেছে সাফ অনূর্ধ্ব–২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ। বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার জানিয়েছেন আসন্ন সাফ অনূর্ধ্ব–২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপেও জয়ের ধারা ধরে রাখার লক্ষ্যের কথা। ঢাকার বসুন্ধরার কিংস এরেনায় আগামী ১১–২১ জুলাই পর্যন্ত সাফ অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ষষ্ঠ আসর অনুষ্ঠিত হবে। ভারতের সাথে যৌথভাবে আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। তবে এবারের আসরে ভারত অংশ নিচ্ছে না। গতকাল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আফঈদা বলেছেন, ‘এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব খেলে আসার পর আমাদের এই দলটি সাফের প্রস্তুতিতে খুব কম সময় পেয়েছে। কোচ যেভাবে বলেছেন সেভাবেই আমরা অনুশীলন করার চেষ্টা করেছি। আমাদের এই দলটি দক্ষিণ এশিয়ার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। সে কারনেই জয়ের ধারা বজায় রাখতে চাই।’ আফঈদা আরো বলেন এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া প্রতিটি দলই ভাল ও শক্তিশালী। কোন দলকেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। ম্যাচ বাই ম্যাচ লক্ষ্যস্থির করে বাংলাদেশ নিজেদের সর্বোচ্চটা দেবার চেষ্টা করবে। বাংলাদেশ অধিনায়ক আরো বলেছেন দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের সাথে জুনিয়রদের বোঝাপড়াটা দুর্দান্ত। কারন সিনিয়র ও জুনিয়ার দলের সকলে মিলে কোচ পিটার বাটলারের সাথে একসাথেই অনুশীলন করে থাকে। সদ্য সমাপ্ত এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব খেলে এসে মনোযোগ নষ্ট হয়েছে কিনা এবং সে কারনে সাফ অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপে কোন ধরনের চ্যালেঞ্জ অনুভব করছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে আফঈদা বলেন, ‘একজন খেলোয়াড় যখন মাঠে খেলতে নামে তখন প্রতিপক্ষ যেই হোক না কেন পরিপূর্ণ মনোযোগ দিয়েই সে মাঠে থাকে। আমরা পরিপূর্ণ মনোযোগ দিয়েই মাঠে নামবো এবং প্রতি ম্যাচে জয়ের লক্ষ্য থাকবে।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জাতীয় দলের প্রধান কোচ পিটার জেমস বাটলার বলেন, এশিয়ান কাপ থেকে আসার পর এই দলটি একটি ভিন্ন মানের টুর্নামেন্টে খেলতে যাচ্ছে। ইংলিশ কোচ সাফ টুর্নামেন্টকে একটি ডেভেলপমেন্ট টুর্নামেন্ট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এই ধরনের টুর্নামেন্ট খেলোয়াড়দের নিজেদের প্রস্তুত করে তোলার একটি দারুন সুযোগ বলেও বাটলার মনে করেন। কারন একজন খেলোয়াড়ের নিজস্ব পারফরমেন্সটাই প্রথমে জরুরী, ফলাফল নয়। বাফুফে ও এএফসি সদস্য এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের উইমেন্স উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরন জানিয়েছেন গত আসরের তুলনায় এবারের সাফ কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলো রাউন্ড রবিন লিগে আয়োজিত হবে। সর্বোচ্চ পয়েন্ট সংগ্রহকারী দলটি চ্যাম্পিয়ন হবার কৃতিত্ব অর্জন করবে। কিরন জানান, ‘এবার যেহেতু ভারত অংশ নিচ্ছে না তারপরও আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচ উপহার দিয়ে চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রাখার চেষ্টা করবো। বয়সভিত্তির পর্যায়ে আমাদের ধারাবাহিক সাফল্য আছে। সে কারনেই আমরা এই ধারা নষ্ট করতে চাইনা। সাফল্য ধরে রেখে সামনে এগিয়ে যেতে চাই।’ কিরন আরো জানান বাংলাদেশের সামপ্রতিক পারফরমেন্স ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে প্রভাব পড়বে। আগামী ৭ আগস্ট প্রকাশিতব্য নতুন র্যাঙ্কিংয়ে অবশ্যই বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নতি হবে বলে তিনি আশাবাদী। স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও এই টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে নেপাল, ভূটান ও শ্রীলংকা। নেপাল এই টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ র্যাঙ্কধারী দল। তাদের র্যাঙ্কিং ১০০। তারপরের অবস্থানগুলোতে রয়েছে যথাক্রমে বাংলাদেশ ১২৮, শ্রীলংকা ১৫৯ ও ভূটান ১৭১। সাফ অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশীপের সবগুলো ম্যাচ বেসরকারী স্যাটেলাইট চ্যানেল টি–স্পোর্টস সরাসরি সমপ্রচার করবে।