সাতকানিয়ায় রোগী দেখতে চেম্বারে যাওয়ার সময় ডা. ফরহাদ কবিরকে জরিমানা করার ঘটনায় ইউএনও মো. নজরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কে. এম. আল-আমীন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেয়া হয়। আদেশে প্রত্যাহারকৃত ইউএনও মো. নজরুল ইসলামকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামকে প্রত্যাহারের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশ হাতে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসান।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সাতকানিয়া পৌরসভা এলাকায় রোগী দেখতে চেম্বারে যাওয়ার সময় ডা. ফরহাদ কবির নামের এক চিকিৎসকের কাছ থেকে এক হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় ডা. ফরহাদ কবির লকডাউনে চিকিৎসকদের চলাচলে বিধি নিষেধ না থাকার বিষয়টি ইউএনও-কে বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ডাক্তারদের সম্পর্কে নানা মন্তব্য করেন। এক পর্যায়ে বলেন, আমি চাইলে আপনাকে (ডা. ফরহাদ কবিরকে) জেল দিতে পারি। তা করলাম না। দ্রুত জরিমানা দিয়ে চলে যান। তখন বাধ্য হয়ে ডা. ফরহাদ কবির এক হাজার টাকা জরিমানা দেন।
এদিকে, ঘটনার পরদিন ডা. ফরহাদ কবিরের কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের বিষয়টি স্বাচিপ-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীরকে জানান। পরে বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর ডাক্তারের কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের বিষয়টি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে জানান। এছাড়া ঘটনার বিষয়ে দৈনিক আজাদীসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
স্বাচিপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ আ ম ম মিনহাজুর রহমান জানান, করোনা মোকাবেলায় ডাক্তার, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সকলকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। ডাক্তারদের নির্বিঘ্নে চলাচলের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। চিকিৎসকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসকদের চলাচলের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে অসুস্থ মানুষ ও তাদের স্বজনরা ভোগান্তিতে পড়বে। ইউএনও নজরুল ইসলাম ডা. ফরহাদ কবিরের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরও তাকে জরিমানা করাটা খুবই দুঃখজনক। আর পরিচয় নিশ্চিত হতে না পারলে তিনি মামলায় ফরহাদ কবিরের নামের আগে ডাক্তার লিখতেন না।