ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৌরসভার বাঞ্চারামপুর এলাকার বালু ও সিমেন্ট ব্যবসায়ী ঈমাম হোসেন (৩০) চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থেকে অপহরণের শিকার হলে শুক্রবার রাতে সাধারণ জনগণ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় বাঁশখালীর খানখানাবাদের সাগর উপকূল এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
অপহরণকারীদের হাত থেকে এ ব্যবসায়ী নিজেকে রক্ষা করার জন্য ১০টি বিকাশ নম্বরে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করলেও এখনও পর্যন্ত অপহরণকারী চক্রের কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
অপহৃত ব্যবসায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাঞ্চারামপুর এলাকার আক্কাস মিয়ার পুত্র।
অপহরণ ঘটনার ব্যাপারে বালু ও সিমেন্ট ব্যবসায়ী ঈমাম হোসেন জানান, তিনি সাতকানিয়ার ইউনুছ কোম্পানি নামে এক ব্যবসায়ী থেকে গত তিন মাস আগে একটি ট্রাক ক্রয় করেন ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে। ট্রাক কেনা হলেও গাড়িটি তার নামে কাগজপত্র না করায় বিগত কিছুদিন আগে তিনি ট্রাকটি ভাড়া নিয়ে আনোয়ারা এলে থানা পুলিশ সেটা আটক করে।
ট্রাকচালক আল আমিন গাড়ি রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চলে গেলে গত বৃহস্পতিবার ক্রয়করা গাড়ির নতুন মালিক এবং বালু ও সিমেন্ট ব্যবসায়ী ঈমাম হোসেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ এসে থানা থেকে গাড়ি বের করে সাতকানিয়ার একটা গারেজে নিয়ে যান ইউনুছ কোম্পানির সহযোগিতায়।
সেখানে ঠিক করতে না পারায় তার নিজের চালক না আসায় অপরিচিত এক চালকের সহযোগিতায় অন্য গ্যারেজে নেওয়ার সময় ঘটে বিপত্তি। গাড়ি সহ তাকে সাতকানিয়া থেকে বাঁশখালীর দিকে নিয়ে আসে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে।
তাকে ট্রাক থেকে নামিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে বাঁশখালীর খানখানাবাদের মেশিনঘর নামক স্থানে এনে নির্যাতন করে পরিবারের কাছে টেলিফোন করে একে একে বিকাশের মাধ্যমে আড়াই লক্ষ টাকা আদায় করে।
পরিবারের লোকজনের কাছে ব্যবসার জন্য লাগছে এ অজুহাতে টাকা আনানো হয়। ব্যবসায়ী ঈমাম হোসেনের বাবা আক্কাস মিয়া বলেন, “মোবাইল ফোনে টাকার কথা বলার সময় অপহরণ হয়েছে সেই কথা বলতে না পারলেও আমরা ধরে নিয়েছি সে কোনো একটা বিপদে পড়েছে। তাই আমরা যে মোবাইল ফোন নম্বর বলেছে সেই নম্বরে টাকা পাঠাতে বাধ্য হয়েছি। বিষয়টি সুস্পষ্ট না হওয়ায় আমরা প্রশাসনের কাছে যেতে পারেনি।”
এদিকে বাঁশখালীর খানখানাবাদে সাগর উপকূলে তার কাছ থেকে টাকা আদায় শেষে শুক্রবার রাতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়ার পথে অপহরণকারীদের ধাক্কা দিয়ে নেমে বসে থাকা কিছু লোকের কাছে তাকে বাঁচানোর কাকুঁতি জানালে স্থানীয় জিয়াউর রহমান, ইসমাঈল গংরা তাকে খানখানাবাদের চেয়ারম্যান মো. বদরুদ্দিন চৌধুরীর কাছে নিয়ে যান।
চেয়ারম্যান মো. বদরুদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি বিস্তারিত অবগত হয়ে শুক্রবার গভীর রাতে বাঁশখালী থানা পুলিশকে জানালে বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তারা তাকে থানায় নিয়ে আসেন।
এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চললেও মামলাটা কোন থানায় হবে তার সিদ্ধান্ত না হওয়ায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মামলা করা হয়নি।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, “আমরা স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি।” ঘটনায় কারা জড়িত তা বের করার চেষ্টা চলছে তবে অপহরণের স্থান সাতকানিয়ায় হওয়ায় মামলাটি কোন থানায় হবে তা এখনও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।