সাতকানিয়ায় সড়কের পাশে আবর্জনার স্তূপ

উৎকট গন্ধে নাকাল পথচারী

মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, সাতকানিয়া | রবিবার , ১৩ অক্টোবর, ২০২৪ at ৯:১০ পূর্বাহ্ণ

সাতকানিয়ায় কেরানীহাটের অদূরে চট্টগ্রামকঙবাজার মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে ফেলা ময়লা আবর্জনার উৎকট গন্ধে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। এতে চরম ভাবে দূষিত হচ্ছে এলাকার পরিবেশ। এসব ময়লা আবর্জনার পচা গন্ধে নাকাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার পথচারীর। কোনো কোনো স্থানে ময়লা আবর্জনার স্তূপ সড়কের ফুটপাত দখল করে নিয়েছে।

আবার কোথাও ফুটপাত পেরিয়ে সড়কের উপর চলে এসেছে। দেখলে মনে হবে সড়কের উপর যেন ময়লা আবর্জনার ভাগাড়। এমন পরিস্থিতির ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে জনার কেঁওচিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও সাতকানিয়া পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের।

এত জনদুর্ভোগের পরও এসব ময়লা অপসারণের উদ্যোগ কেউ নিচ্ছে না। ফলে সড়কের পাশে থাকা ময়লা অপসারণ করে উৎকট গন্ধ থেকে পথচারীদের রক্ষার জন্য প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সড়কের পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে বিকল্প জায়গা খোঁজা হচ্ছে।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, সাতকানিয়ায় কেরানীহাটের উত্তর পার্শ্বে সাতকানিয়া রিসোর্ট থেকে শুরু করে জনার কেঁওচিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত এলাকায় সড়কের পশ্চিম পাশে রয়েছে ময়লা আবর্জনার বিশাল স্তূপ। মাছ, মুরগির নাড়িভূড়ি, নষ্ট সবজি, বিভিন্ন ধরনের পচা ফল, হাসপাতালেল বর্জ্য ও হোটেল রেস্টুরেন্টের যাবতীয় বর্জ্যসহ সব ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে সড়কের পাশে। আবর্জনাগুলো পচে উৎকট গন্ধ চড়াচ্ছে।

ফলে সড়কের পাশ দিয়ে পথচারীরা হাঁটার সময় কষ্টের শিকার হয়। অনেকে নাক চেপে ধরে চলাচল করছে। এসব আবর্জনার ফলে শিক্ষার্থী ছাড়াও হাজার হাজার পথচারী প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে আবর্জনাগুলো সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন জনার কেঁওচিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, সাতকানিয়া পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকশিক্ষার্থীরা ও এলাকাবাসী।

সাতকানিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারিস্তা করিম জানান, এ বিষয়ে আমরা অবগত আছি। বিষয়টি আমি নিজেও দেখেছি। এ মূহুর্তে ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট কোনো স্থান নেই। ফলে লোকজন সড়কের পাশে ময়লা ফেলছে।

এতে করে এলাকার পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। ময়লা আবর্জনার গন্ধে পথচারীরা দুর্ভোগে পড়ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট অনেকের সাথে কথা বলেছি। এমন একটা জায়গা খোঁজছি যেখানে ময়লা আবর্জনাগুলো ফেললে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে না। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে জায়গার ব্যবস্থা হবে। তখন সড়কের পাশে কাউকে আবর্জনা ফেলতে দেয়া হবে না।

কেরানীহাট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মনজুর আলম জানান, কেরানীহাটের উত্তর পার্শ্বে বিবিএম ইটভাটা থেকে শুরু করে জনার কেঁওচিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত এলাকায় সড়কের পাশে ময়লার বড় স্তূপ হয়ে গেছে।

এখানকার ময়লা আবর্জনা অনেক সময় সড়কের উপর চলে আসে। এছাড়া এসব ময়লা আবর্জনা থেকে প্রতিনিয়ত উৎকট গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও পথচারীরা দুর্গন্ধের কারনে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তিনি আরো জানান, সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের এক সভায় সড়কের পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলার বিষয়টি উঠে এসেছে। ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্য কোথাও একটি জায়গা খুঁজে বের করার উপর জোর দেয়া হয়। যেখানে ময়লা ফেললে মানুষের দুর্ভোগ হবে না।

সাতকানিয়া পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হোছাইন আল হিশাম মুহাম্মদ জাবেদ জানান, প্রতিদিন মাছ ও মুরগির নাড়িভূড়ি থেকে শুরু করে কেরানীহাট বাজারের সমস্ত ময়লা আবর্জনা মহাসড়কের পশ্চিম পাশ ঘেঁষে ফেলা হচ্ছে।

সড়কের পাশে ফেলা ময়লা আবর্জনা অনেক সময় সড়কের উপর চলে আসে। আবর্জনাগুলো পচে প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ছাড়াও সাধারণ পথচারীদেরকে প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এছাড়া আবর্জনার দুর্গন্ধ বাতাসে ভেসে স্কুলের ভেতর নিয়ে যাচ্ছে। এজন্য বিষয়টি আমি উপজেলা প্রশাসনের এক সভায় উত্থাপন করেছি। প্রশাসন দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

কেঁওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মো. জামাল উদ্দিন জানান, কেরানীহাটের উত্তরে বিবিএম ইটভাটা থেকে শুরু করে জনার কেঁওচিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত এলাকায় মহাসড়কের পাশে প্রতিদিন ময়লা আবর্জনা ফেলতে ফেলতে এখন বড় স্তূপ হয়ে গেছে। আবর্জনাগুলো পচে এখন উৎকট গন্ধ ছড়াচ্ছে।

দুর্গন্ধের কারণে এ সড়ক দিয়ে চলাচলের সময় নাক চেপে ধরলেও বমি আসার উপক্রম হয়।

এ ধরনের দুর্গন্ধ সহ্য করে প্রতিদিন জনার কেঁওচিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, সাতকানিয়া পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ও হাজার হাজার পথচারী এ সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। ফলে সড়কের পাশের সমস্ত ময়লা আবর্জনা দ্রুত সময়ের মধ্যে অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট দাবি জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে পশ্চিম গহিরা পঞ্চবিহারে উপহার সামগ্রী বিতরণ
পরবর্তী নিবন্ধআনন্দ ভাগাভাগি ছাড়া উৎসব সফল হয় না