সাতকানিয়ার দক্ষিণ ঢেমশা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের নাপিতের চরের কাইমার পাড়া এলাকায় এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শশুরবাড়ীর লোকজন ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার কথা বললেও নিহতের স্বজনদের দাবী যৌতুকের জন্য তাদের মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের স্বামী নাপিতের চর কাইমার পাড়া এলাকায় মৃত জালাল আহমদের পুত্র মোরশেদুল আলম ও ননদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। নিহতের নাম নাইমা সুলতানা নিশি (১৯)। তিনি উপজেলার কেউচিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ব্যাবসায়ী পাড়ার মোহাম্মদ সবুজ মিয়া (প্রকাশ সবুজ মিস্ত্রির) মেয়ে।
নিহতের মা শামসুন্নাহার দৈনিক আজাদীকে বলেন, গত ৩ মাস আগে মোরশেদুল আলমের সাথে তাঁর মেয়ের বিয়ে দিলেও টাকা পয়সার অভাবে মেয়ের জামাইকে তেমন কিছু দিতে পারেননি। মেয়ের জামাই এক লক্ষ টাকা দাবী করার কারণে প্রথম দফায় তাঁকে ২২ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। পরে জমি বিক্রি করতে পারলে বাকি টাকা দেওয়ার কথা। মেয়ে গর্ভবতী হলেও মেয়ের জামাই টাকার জন্য প্রতিনিয়ত আমার মেয়েকে নির্যাতন করছিল। সর্বশেষ বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে খবর পান তাঁর মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। হাসপাতালে এসে তাঁর মৃতদেহ দেখতে পান।
তিনি দাবী করেন, যৌতুকের জন্য মেয়ের জামাই এবং শশুরবাড়ির লোকজন তাঁর মেয়েকে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখেছে। তিনি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান। নিহতের মামা মোহাম্মদ তৈয়ব জানান, তিনি ড্যাম্পার গাড়ি চালান। ভাগনির শশুর বাড়ির পাশে ইটের ভাড়া নিয়ে গেলে ইট নামানোর সময় দেখতে পান তাঁর ভাগনি জামাই। তার ভাই, ছোট বোন মিলে ভাগনিকে কোলে করে গাড়িতে তুলছে। কি হয়েছে জানতে চাইলে বলে এমনিতে বেহুশ হয়ে গিয়েছে তাই হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। এর পরেই আমার ভাগনির মৃত্যু সংবাদ শুনতে পাই।
লাশের সুরহতালকারী কর্মকর্তা সাতকানিয়া থানার উপ–পরিদর্শক (এসআই) শাহরিন হোসেন জানান, লাশের গলায় ফাঁসির দাগ ব্যাতিত শরীরের অন্য কোন জায়গায় কোন ধরনের নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার দৈনিক আজাদীকে বলেন, গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পেয়ে সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান সহ তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যার ঘটনা মনে হলেও নিহতের স্বামী ও ননদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর যথাযথ কারণ নির্ণয় করা সম্ভব হবে।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ এখনো পর্যন্ত লিখিত কোন ধরনের অভিযোগ দেয়নি, এ ঘটনা নিয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।