সাতকানিয়ায় সাঙ্গু নদীতে ডুবে কামরুল হাসান মিশকাত (১১) ও ওমর ফারুক মিজবাহ (৮) নামে আপন দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাঙ্গু নদীতে গোসল করতে গিয়ে পানিতে তলিয়ে যায় তারা এবং বিকালে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
মিশকাত ও মিজবাহ পুরানগড় ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের কালি নগর এলাকার কুয়েত প্রবাসী আবদুল মোনাফের পুত্র। দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শিবলী নোমান ও সাতকানিয়া থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
পুরানগড় ইউপি চেয়ারম্যান আ ফ ম মাহবুবুল হক সিকদার জানান, বাজালিয়া রাইজিং স্টার স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র কামরুল হাসান মিশকাত ও পুরানগড় শাহ শরফুদ্দিন মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র ওমর ফারুক মিজবাহসহ কয়েকজন শিশু প্রতিদিনের মতো গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাঙ্গু নদীর পুরানগড়ের কালিনগর এলাকায় গোসল করতে যায়। এ সময় মিশকাত ও মিজবাহ নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। পরে অন্যান্য শিশুরা মিশকাতদের ঘরে গিয়ে বিষয়টি জানায়। কিন্তু তাদের পরিবারের সদস্যরা মনে করেছে শিশুরা দুষ্টামি করছে। পরবর্তীতে মিশকাত ও মিজবাহ দীর্ঘক্ষণ পরও ঘরে ফিরে না আসায় চারদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এক পর্যায়ে সাঙ্গু নদীর একটি গর্তে ভাসমান অবস্থায় তারা দুই ভাইয়ের স্যান্ডেল দেখতে পায়। এরপর নদীতে অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে। পরে জেলেদের জাল দিয়ে আলাদাভাবে দুই ভাইয়ের লাশ উদ্ধার করে।
ইউপি চেয়ারম্যান আরো জানান, সংঘবদ্ধ বালুখেকো চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ সাঙ্গু নদীর বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে। পুরানগড়ের কালি নগর এলাকায়ও তারা বালু উত্তোলন করেছে। তাদের বালু উত্তোলনের ফলে নদীতে সৃষ্ট গভীর গর্তে তলিয়ে গিয়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শিবলী নোমান জানান, সাঙ্গু নদীতে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বালুখেকোদের কারণে এমন মৃত্যু হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা প্রাথমিকভাবে নদীতে নেমে দেখতে পারিনি। এছাড়া শিশুদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেনি। তবে পুলিশ এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করবে। ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে কোনো গর্ত সৃষ্টি হয়েছে কিনা, ওই ধরনের কোন গর্তে পড়ে মৃত্যু হয়েছে কিনা সব বিষয় তদন্ত করে দেখা হবে।