তামিম ইকবালের পদ ছাড়ার পর এক সপ্তাহেরও বেশি সময় কেটে গেছে। এরই মধ্যে কে হবে ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। বোর্ডের সভা হয়েছে। কিন্তু সিদ্ধান্ত হয়নি। শেষ পর্যন্ত গতকাল বিসিবি সভাপতি দিলেন সে ঘোষণা। যে ঘোষণায় সাকিব আল হাসানকে আসন্ন এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মনোনীত করা হয়েছে। তাই ২০২৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব পেলেন সাকিব। তবে তিন সংস্করণেই সাকিব অধিনায়ক থাকবেন কি না বা বিশ্বকাপের পরও তাকে ওয়ানডের নেতৃত্বে দেখা যাবে কি না, এই সিদ্ধান্ত তার সঙ্গে আরও আলোচনা করে পরে নেওয়া হবে বলে জানান বিসিবি সভাপতি। দেশের টেস্ট ও টি–টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বে আগে থেকেই আছেন সাকিব।
তামিমের পদ ছাড়ার পর সম্ভাব্য অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের নামই উচ্চারিত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। তবে লিটন দাসকে নিয়েও ছিল আলোচনা। সম্ভাবনা খানিকটা ছিল মেহেদী হাসান মিরাজেরও। শেষ পর্যন্ত বিশ্ব আসরের মতো বড় মঞ্চে সাকিবের অভিজ্ঞতাতেই ভরসা রাখল বিসিবি।
সাকিবের নেতৃত্বে দেশের মাঠে ২০১১ বিশ্বকাপে খেলেছিল বাংলাদেশ। ওই বছরের আগস্টে জিম্বাবুয়ে সফরের পর তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে ক্যারিয়ারের দীর্ঘ পথচলায় টেস্ট ও টি–টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব পেলেও ওয়ানডে দলের নিয়মিত অধিনায়কের দায়িত্ব আর পাননি। ২০১৫ সালে দুটি ও ২০১৭ সালে একটি ওয়ানডেতে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে তা ছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে। এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশকে ৫০ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাকিব। তাতে জয় ২৩টি, পরাজয় ২৬টি। ফলাফল হয়নি একটিতে।
তামিম দায়িত্ব ছাড়ার দুদিন পর সংবাদমাধ্যমকে বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, পরবর্তী অধিনায়ক হিসেবে সাকিবই অবধারিত পছন্দ। তবে তিনি দীর্ঘমেয়াদে নেতৃত্ব নিতে চান কি না বা তিন সংস্করণে নেতৃত্ব দিতে কতটা প্রস্তুত, এসব নিয়ে জটিলতার কথাও বলেছিলেন বিসিবি সভাপতি।
বিসিবি প্রধান বলেন, সামনে এশিয়া কাপ। এরপরই বিশ্বকাপ। এত কম সময়ের মধ্যে আমার কাছে মনে হয়েছে, সবচেয়ে সহজ ও অবধারিত পছন্দ সাকিব আল হাসান। আরেকটা পছন্দ ছিল। আর তা হচ্ছে সাকিব না খেললে সহ–অধিনায়ক হিসেবে লিটন দাশের অধিনায়ক হওয়া। পরে মেহেদী হাসান মিরাজের নামও এসেছে। দীর্ঘ মেয়াদের চিন্তা করলে কে হবেন অধিনায়ক সেই আলোচনাই আসছিল বারবার। তবে সাকিবকে তিন সংস্করণেই অধিনায়ক করা বা দীর্ঘমেয়াদে দায়িত্বে রাখা নিয়ে এখনও কিছু সংশয়ের কথা জানান বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, সাকিবের সঙ্গে সেরকম আলোচনা হয়নি। ও দেশে এলে তারপর বলতে পারব। দীর্ঘ মেয়াদের পরিকল্পনাটাও জানতে হবে। কারণ একসঙ্গে তিনটা ওর ওপর বোঝা হয়ে যাবে। কারণ যে পরিমাণ খেলা আমাদের, কাজেই ওর সঙ্গে কথা বলে নিতে হবে। ওর সঙ্গে কথা না বলে কিছু বলাটা এখন কঠিন।
যেহেতু সাকিব এখন বিদেশে একটি লিগে খেলছে সেহেতু এখন তার সাথে এতটা কথা বলা সম্ভব নয়। তাই সাকিব দেশে ফিরে এলে কথা বলে ঠিক করব বাকিটা। বিসিবি সভাপতি বলেন, সাকিব বেশ সিরিয়াস একজন ক্রিকেটার। বিশেষ করে ক্রিকেট নিয়ে তার মত সিরিয়াস আর কেউ নেই। ওর সামর্থ্য ও সম্ভাবনা নিয়ে কখনও কারও সন্দেহ থাকার প্রশ্নই ওঠে না। সব ঠিকঠাক থাকলে বাংলাদেশের দ্বিতীয় অধিনায়ক হিসেবে দুটি ওয়ানডে বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দেবেন সাকিব। তার আগে মাশরাফি নেতৃত্ব দিয়েছেন ২০১৫ ও ২০১৯ বিশ্বকাপে।