বহুল প্রত্যাশিত ফেরি সার্ভিস এখনই চালু করা যাচ্ছে না সন্দ্বীপ–চট্টগ্রাম নৌরুটে। একদিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড অংশে ফেরি চলাচলের জন্য উপযুক্ত ঘাট এখনো ঠিক করা হয়নি। অন্যদিকে সন্দ্বীপ অংশে পলি ভরাট হয়ে জেগে উঠছে নতুন চর। দিন দিন চরের পরিধি বৃদ্ধি ফেরি চলাচলের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরুকে বিলম্বিত করছে।
ঢাকা–চট্টগ্রাম হাইওয়ে থেকে কুমিরা ঘাটে আসার জন্য রাস্তাসহ অন্যান্য অবকাঠামো বিআইডব্লিউটিএর থাকলেও সন্দ্বীপের জন্য নির্মিত ফেরি এ ঘাটে জোয়ার ভাটায় সমানভাবে চলাচল করা নিয়ে সন্দিহান কর্মকর্তারা। কুমিরার খালকে ড্রেজিং করে ফেরি সহজে প্রবেশ আর বাইর করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে জায়গা নেই এ ঘাটে। এ নিয়ে কয়েকবার বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসিসহ নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা ফেরি চলাচলের সম্ভাব্যতা যাচাইসহ ফেরির রুট ঠিক করতে সন্দ্বীপ এসেছেন।
২০২২ সালের অক্টোবরে সন্দ্বীপ–সীতাকুণ্ড নৌরুটে ফেরি চলাচলের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য সন্দ্বীপ এসেছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব এসএম ফেরদৌস আলম, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান শামীম আল রাজীসহ নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ। সেসময় তারা আশ্বাস দিয়েছিলেন ২০২৩ সালের শুষ্ক মৌসুমেই চালু হবে সন্দ্বীপ–সীতাকুণ্ড ফেরি সার্ভিস যেটি চলবে সন্দ্বীপের গাছুয়া ও সীতাকুন্ডের বাকখালী দিয়ে।
তবে দুই বছর হয়ে গেলেও ফেরি চলাচলের জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম এর মধ্যে নেয়া হয়নি। এদিকে ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলে আবার তোড়জোড় শুরু হয় সন্দ্বীপ–সীতাকুণ্ড নৌরুটে ফেরি সার্ভিস চালু করার। এ লক্ষ্যে বিআইডব্লিউটিএর উদ্যোগে গত ১৯ আগস্ট গঠিত হয় একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৯ আগস্ট চট্টগ্রাম পার্শ্বে সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাটের সাইট নির্ধারণ ও সন্দ্বীপ প্রান্তে কোন ঘাট দিয়ে ফেরি চলাচল করতে পারবে সে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য পরিদর্শনে আসেন উক্ত কমিটির সদস্যরা। তবে সেদিনই ফেরি চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট কোন রুটের কথা জানাতে পারেনি কমিটি।
এদিকে গতকাল শুক্রবার সকালে কুমিরা ঘাট পরিদর্শন করে সন্দ্বীপ আসেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফাসহ বিআইডব্লিউটিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা। এ সময় তারা চট্টগ্রাম অংশে সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাট ছাড়াও সন্দ্বীপ অংশে গুপ্তছড়া ঘাট আর গাছুয়া আমির মোহাম্মদ ঘাট পরিদর্শন করেন।
কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা এ সময় সাংবাদিকদের জানান, নদীর স্রোত আর জেগে উঠা চরের কারণে ফেরি চলাচলের রুট ঠিক করে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে। ফেরি চলাচলের জেটি নির্মাণের পর সে জায়গায় যদি চর উঠে তখন ঐ জেটি তো অকার্যকর হয়ে পড়বে। সেক্ষেত্রে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে চর জাগলেও জোয়ার ভাটায় ফেরি চলাচলে বিঘ্ন না ঘটে।
এ সময় তিনি সন্দ্বীপের গাছুয়া ঘাটে মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ল্যান্ডিং স্টেশনসহ জেটি নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করে দ্রুত কাজ শেষ করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ প্রদান করেন।