সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করতে এসে চন্দনাইশে জনতার হাতে আটক হয়েছে ২ প্রতারক। তাদের নাম শওকত হোসেন মুন্না (২৯) ও মো. সাজ্জাদ হোসেন (২৩)।
আজ মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তারা উপজেলার বরকল এলাকায় এসে একটি বেকারি থেকে চাঁদাবাজি করছিল। পরে জনতা তাদের আটক করে চন্দনাইশ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
বরকল সোনালী বেকারির সত্ত্বাধিকারী আহমদ শফি বলেন, “আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শওকত হোসেন মুন্না তার এক সহযোগীকে নিয়ে আমার বেকারিতে এসে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এর আগেও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সে হুমকিধমকি দিয়ে আমার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছিল। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আবারও আমার বেকারিতে এসে আমার ছেলের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এসময় আমি বেকারিতে ছিলাম না। পরে আমি বেকারিতে আসলে ১ লাখ টাকা চাঁদা দিতে বলে, অন্যথায় বেকারি বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়।”
তিনি আরো বলেন, “এসময় তাদের সাথে কাটাকাটির বিষয়টি স্থানীয় লোকজন টের পায় এবং লোকজন জড়ো হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। এসময় তাদের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে স্থানীয় জনতা তৎক্ষণাৎ তাদের আটক করে। তাদের কাছে আই টিভিঅনলাইনডটকম এবং জাতীয় ক্রাইম রিপোর্টার্স সোসাইটি নামে ২টি আইডি কার্ড পাওয়া যায়। ইতিমধ্যে আনোয়ারা এলাকার ঢাকা বেকারি ও সুইটস মিষ্টি কারখানার মালিকও এসে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন। এর পূর্বে তারা তার কাছ থেকেও চাঁদা নিয়ে গেছে বলে জানান।”
আনোয়ারার স্থানীয় সাংবাদিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতারক শওকত হোসেন মুন্না বিগত ৩ বছর ধরে পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে নম্বরবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করত।
এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আনোয়ারা থানায় একটি চাঁদাবাজি মামলা হয়। পরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন জেল খেটে বের হয় কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে হঠাৎ সে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছিল।
তারা আরো জানান, সে নিজেকে কখনও সাংবাদিক, কখনও পুলিশ আবার কখনও ক্রাইম পেট্রোল কর্মী হিসেবেও পরিচয় দিত।
এই বিষয়ে চন্দনাইশ থানার এসআই মাজহারুল বলেন, “আনোয়ারা উপজেলার চাতরি এলাকার জেবল হোসেনের পুত্র শওকত হোসেন মুন্না ও তার সহযোগী একই উপজেলার বৈরাগ এলাকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের পুত্র মো. সাজ্জাদ হোসেন উপজেলার বরকল এলাকায় এসে একটি বেকারিতে চাঁদাবাজি করার সময় স্থানীয় জনতা তাদের আটক করে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসি।”
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দীন সরকার জানান, আনোয়ারা থেকে ২ ব্যক্তি চন্দনাইশের বরকল এলাকায় এসে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করার সময় স্থানীয় জনতা তাদের আটক করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।