ভবিষ্যত নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সর্বজনীন প্রবাসী পেনশন স্কিম চালু করেছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু প্রবাসীদের অনেকেই ভালোভাবে জানেন না এ পেনশন স্কিম কী। আবার যারা জেনেছেন তাদের অনেকেই ভালোভাবে বুঝতে পারছেন না এ পেনশন স্কিম করার নিয়ম ও সুযোগ–সুবিধা সম্পর্কে। এর ফলে সরকার চমৎকার উদ্যোগ নেয়া সত্যেও প্রবাসীদের মাঝে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না বলে অভিমত সচেতন প্রবাসীদের।
তারা বলেন, সরকারের নতুন চালু করা প্রবাসী পেনশন স্কিম প্রশংসনীয় এবং সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ। তবে এ নিয়ে রয়েছে নানা রকম প্রশ্ন ও আলোচনা। প্রবাসীরা কোথায় এবং কীভাবে এতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন, প্রবাস স্কিমে কত বছর করে, মোট কত কিস্তি, প্রতি কিস্তিতে টাকার পরিমাণ কত, কত টাকার কিস্তিতে মাসিক কত টাকা পেনশন পাবেন, দেশে ফিরে সমপরিমাণ অর্থ দেশীয় মুদ্রায় পরিশোধ করা যাবে কিনা, বর্তমানে নির্ধারিত চাঁদার পরিমাণ কমানো যায় কিনা, প্রয়োজনে স্কিম পরিবর্তন করতে পারবেন কিনা, এ পেনশন স্কিমের আওতায় সুদ মুক্ত ঋণ নেয়ার সুযোগ আছে কিনা, থাকলে ক্যাটাগরি অনুযায়ী কত টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন ইত্যাদি। পেনশন স্কিম বিষয়ে ধারণা দিয়ে প্রবাসীদের আগ্রহী করে তুলতে হলে ব্যাপকভাবে ক্যাম্পেইন বা প্রচার–প্রচারণা প্রয়োজন। এ জন্য প্রবাসীদের আগ্রহ বৃদ্ধিতে দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের পাশাপাশি বাংলাদেশি সংগঠনগুলোকেও এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে দুবাই ও উত্তর আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, তারা প্রবাসী পেনশন স্কিম বিষয়ে প্রবাসীদের মধ্যে আগ্রহ বৃদ্ধি করার জন্য ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দুবাই ও উত্তর আমিরাতের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি প্রোগ্রাম করছেন, সাংবাদিকদের নিয়ে প্রেস কনফারেন্স করেছেন, গোল টেবিল বৈঠক হয়েছে। সামনে তাদের আরো কর্মসূচি রয়েছে ওইসব কর্মসূচির মাধ্যমে তারা প্রবাসীদের অবহিত করবেন। তিনি বলেন, তবে এটি একটি নতুন পদ্ধতি নতুন সিস্টেম।
সুতরাং এটি বুঝে উঠতে একটু সময় লাগবে। কারণ এ পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড এবং টেকনোলজি বেস্ট একটি কর্মসূচি সিস্টেম। প্রবাসীরা ঘরে বসেই কম্পিউটারের মাধ্যমে পেনশন স্কিমের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দুবাইয়ের ওয়েবসাইট ও ফেসবুকের মাধ্যমেও প্রচার–প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সেখানে কারো কিছু বুঝতে সমস্যা হলে কনস্যুলেটের হেল্প লাইনে যোগাযোগ করলে সহযোগিতা করা হচ্ছে। অনেকেই পেনশন স্কিমের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন আবার অনেকে রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে সমস্যায়ও পরছেন। তিনি বলেন, আমারা তা সমাধানের চেষ্টা করছি। তবে আমরা আশাবাদী আস্তে আস্তে দুবাই ও উত্তর আমিরাতের প্রবাসীরা আকৃষ্ট হয়ে পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হবেন।