নিশিরাতের সরকারের জনগণের কাছে কোনো দায়বদ্ধতা নেই বলে উল্লেখ করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম।
গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার এফডিসির গেটে বিএনপির এক দফা আদায়ের সমর্থনে অবৈধ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে এলডিপির গণমিছিল শুরুর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাংলানিউজের।
অলি আহমদ বলেন, জাতির উদ্দেশে আমি বলতে চাই, ব্যাংকগুলো আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত। দুই ট্রিলিয়ন ব্যাংকের খারাপ লোন রয়েছে, যেটা রিকভার করার মতো নয়। বাণিজ্য ঘাটতি ৩৬ বিলিয়ন। ছয়টি ব্যাংকের প্রায় পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। নিত্যপণ্যের মূল্য আকাশচুম্বী। যার ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। এসব অঞ্চলে সরকার যে সাহায্য–সহযোগিতা দিয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বিশেষ করে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজারে যে সাহায্য দেওয়া হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় ১০০ ভাগের এক ভাগও নয়। আমি আশা করি, সরকার মানুষের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে তাদের পুনর্বাসনের জন্য সাহায্য সহযোগিতা করবে। যাদের ঘর–দুয়ার নষ্ট হয়েছে, তাদের ঘর–দুয়ার তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনের বিষয় উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, নতুন যে সাইবার আইন করা হয়েছে, এতে ৩৩টি বিতর্কিত ধারা রয়েছে। এ ধারাগুলো রেখে যদি সাইবার আইন করা হয় তাহলে জনগণ ও সাংবাদিকদের কোনো উপকার হবে না।
এলডিপি সভাপতি বলেন, ডলারের অভাবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টে যে পাওনা রয়েছে, সরকারের পক্ষে সেই পাওনা আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন খাত থেকে যে ঋণ নিয়েছে তার পরিমাণ ১৪ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। দেড় বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৮ লাখ লোক সৌদি আরবে গেছে। রেমিট্যান্স কমে গেছে ১৭ শতাংশ। বেড়েছে টাকা পাচার। অতএব আমরা মনে করি, বর্তমান সরকার যেভাবে দেশ পরিচালনা করছে, এ নিশিরাতের সরকারের জনগণের কাছে তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। বাংলাদেশে কোনো ন্যায় বিচার নেই। মানুষ অসহায় জীবনযাপন করছে। সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে সাধারণ জনগণ নির্যাতিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা চাই দেশ যেন গৃহযুদ্ধ, মারামারি, হানাহানির দিকে এগিয়ে না যায়। দেশে যেন অশান্তি সৃষ্টি না হয়। আপনারা ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিলেন, আমরা আশা করবো আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের পথ সুগম করবেন। অন্যথায় আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আপনারা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম বন্ধ হবে না। অতীতেও যারা ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে ছিল, তাদের শেষ পরিণতি ভালো হয়নি। আমরা অশান্তি চাই না। আমাদের দাবি এ সংসদের বিলুপ্তি ঘটাতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। এটা যত তাড়াতাড়ি করা সম্ভব হবে, ততই দেশের ও আওয়ামী লীগের জন্য মঙ্গল।