শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য নিরসনের জন্য সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ও উৎসব ভাতা–সহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধাদি বাড়ানোর ব্যাপারে আগামী বাজেটে বরাদ্দ রাখার প্রক্রিয়া চলছে।
গতকাল সকালে চট্টগ্রামের একটি কনভেনশন হলে বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি–বাকশিস চট্টগ্রাম জেলা শাখা ও চট্টগ্রাম মহানগর শাখার ত্রি–বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী একথা বলেন। এছাড়া বেসরকারি কলেজে ২০১০ এর নীতিমালা অনুযায়ী সহযোগী অধ্যাপক পদ পুনর্বহাল করা, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদ পরিবর্তন করে সহকারী অধ্যাপক পুনর্বহাল করা এবং অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়ার শর্ত শিথিল করার জন্য বাকশিস নেতৃবৃন্দের প্রস্তাবের ভিত্তিতে শীঘ্রই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার আশ্বাস প্রদান করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলীর বিষয় নিয়েও সরকার কাজ করছে। তবে বদলী নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে বেশ কিছু জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। শিক্ষাক্ষেত্রে স্মার্ট, শিক্ষিত জনগোষ্ঠী এবং মানবসম্পদ তৈরি করার লক্ষ্যে গৃহীত নতুন কারিকুলাম এই কারিকুলাম বাস্তবায়নে তিনি কলেজ শিক্ষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন এবং শিক্ষকদেরও বাস্তবজ্ঞান, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার মাধ্যমে নতুন শিক্ষা কারিকুলামে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।
বাকশিসের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা এমপি সম্মেলন উদ্বোধন করে বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ তথা উন্নত বাংলাদেশ করতে হলে রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। দেশের ৯০ ভাগ জাতীয় শিক্ষার দায়িত্বপালনকারী বেসরকারি শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে সম–যোগ্যতা সম–দায়িত্ব ও সম–অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ সরকারি শিক্ষকদের অনুরূপ বাড়িভাড়া, পূর্ণাঙ্গ উৎসব ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান এবং পূর্ণাঙ্গ পেনশন দিতে হবে। শুধু তাই নয় সরকারি কলেজ শিক্ষকদের অনুরূপ বেসরকারি এমপিওভুক্ত কলেজ শিক্ষকদের সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিতে হবে।
বাকশিস চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ দবির উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বাকশিসের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ফয়েজ হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাকশিস চট্টগ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. আবু তাহের চৌধুরী। সম্মেলনে প্রস্তাবনা তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় ও জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সমীর কান্তি দাশ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম রেজা সৌরভ, সহদফতর সম্পাদক অধ্যাপক মুর্শিদ শাকুরী, ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক অধ্যক্ষ শেখ জুলহাস উদ্দিন এবং চট্টগ্রাম মহানগর আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আ. ন. ম সরওয়ার আলম প্রমুখ। সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন সঞ্চালনা করেন মহানগর সদস্য সচিব অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান। সম্মেলনে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ প্রায় ১৫০০ শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। বিকেলে ওমরগণি এম ই এস কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিলে নির্বাচনী অধিবেশনে বাকশিস চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যক্ষ সমীর কান্তি দাশ, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ও কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যাপক সুনীল কুমার শীল। বাকশিস, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যক্ষ আ. ন. ম সরওয়ার আলম ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দিকী ও কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আইয়ুব। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।