লোহাগাড়ার পুটিবিলায় সরইখাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী মহল। ইউনিয়নের হাছনা ভিটা এলাকায় স্যালো মেশিন বসিয়ে এই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়বে দুই উপজেলার সেতুবন্ধন ব্রিজ।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, দরবেশহাট ডিসি সড়কের হাছনা ভিটা এলাকায় সরই খালের উপর নির্মিত ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে প্রায় একশত ফুট পূর্বে বালু উত্তোলনের স্থান। ইতোমধ্যে খাল থেকে অবৈধভাবে উত্তোলন করে বিশাল একটি বালুর স্তূপ করা হয়েছে। খালের পাড়ে বাঁশঝাড় থাকায় লোকচক্ষুর আড়ালে এই অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে ওই প্রভাবশালী মহল। সেখানে গিয়ে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় আশপাশের কেউ তাদের ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। এভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ধসে পড়বে ব্রিজটি।
জানা যায়, প্রায় ১৫ দিন একটি প্রভাবশালী মহল সরই খালে স্যালো মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। যার ফলে ধসে যাচ্ছে খালের পাড় এবং হুমকিতে রয়েছে ব্রিজ। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। এছাড়া অবৈধভাবে অব্যাহত বালু উত্তোলনের ফলে ২০১৮ সালে ওই স্থানে থাকা একটি ব্রিজ ধসে পড়েছিল। এতে লোহাগাড়ার সাথে পার্বত্য লামা উপজেলার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীদের। পরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সরইখালে ধসে যাওয়া ব্রিজের স্থানে ৩ কোটি ১৬ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ব্যায়ে ৪০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করে।
স্থানীয়রা জানান, স্যালো মেশিন ব্রিজ এলাকা থেকে অব্যাহত বালু উত্তোলনের ফলে সরইখালের ব্রিজটি ধসে পড়েছিল। যার ফলে নতুন ব্রিজ নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত দীর্ঘদিন দুই উপজেলার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল। এখন একটি প্রভাবশালী মহল ব্রিজ এলাকা থেকে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পুনরায় বালু উত্তোলন করছেন। ব্রিজের বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আগেই বালু উত্তোলন বন্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ কামনা করেন স্থানীয়রা।
সরই খালের ব্রিজ সন্নিহিত এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. ইদ্রিছ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বা উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
লোহাগাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুন লায়েল জানান, এই ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ ইনামুল হাছান জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটার ব্যাপারে আমরা সবসময় কঠোর অবস্থানে ছিলাম এবং আছি। এছাড়া ভবিষ্যতেও থাকবেন বলে জানান তিনি।