বঙ্গবন্ধু পরিবারের কাছে বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ বলে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী বিষাক্ত মানুষগুলো এখনও তৎপর। তারা দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের কাছ থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। তারা আবার যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যারা বিতর্ক করে, তারা কারা আপনারা জানেন। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
গতকাল বুধবার সকালে নগরীর হালিশহরে জেলা পুলিশ লাইন্সের সিভিক সেন্টারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ২৬৪ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। আপনাদের অনেকে আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। আগামীতে হয়তো জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সংবর্ধনা দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। মহান বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দিতে পেরে আমরা গর্বিত। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আজ ক্ষমতায় আছে বলেই আমরা যে কোনো কাজ করতে সাহস পাচ্ছি। যখন স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় ছিল তখন এ রকম বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দিতে সাহস পাইনি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা থেকে শুরু করে কোটাসহ নানানভাবে সম্মানিত করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা এখনও অসহায় ও কষ্টে আছেন এ রকম খবর পেলেই আমরা ছুটে যাচ্ছি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কারণেই আমরা স্বাধীন ভূখণ্ডে বাস করছি। যতদিন আপনারা বেঁচে আছেন ততদিনই আপনাদের সম্মানিত করার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হকের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মো. ইকবাল হোসেন, অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন অ্যান্ড ইন্টিলেজেন্স) মো. সাইফুল ইসলাম, আর আর এফ চট্টগ্রামের কমান্ড্যান্ট (এসপি) এম এ মাসুদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগরের ইউনিট কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার এ কে এম সরোয়ার কামাল, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। স্মৃতিচারণ করেন সাতকানিয়া উপজেলা কমান্ডার আবু তাহের এলএমজি, হাটহাজারী উপজেলা কমান্ডার নূরুল আলম।
সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমরা ধারণ করি-লালন করি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের সন্তানদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে হবে।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের ২৬৪ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা এবং উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।