সীমান্তে বাংলাদেশিদের সামপ্রতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকারের অবস্থান জানিয়ে ভারতকে কূটনৈতিক পর্যায়ে বার্তা পাঠানোর কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। দুদেশের সম্পর্ক নিয়ে গতকাল বুধবার ঢাকায় এক আলোচনা সভায় তিনি জানান, আগের দিন মঙ্গলবার এ কূটনৈতিক বার্তা পাঠানো হয়েছে। ওই বার্তায় সীমান্ত বিষয়ে দুদেশের মধ্যেকার চুক্তি, বোঝাপড়া এবং প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের ক্ষেত্রে সামপ্রতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো ‘ব্যত্যয়’ বলে তুলে ধরার কথা জানান তিনি। ‘আমরা ডিপ্লোম্যাটিক নোটে কেবল গতকালকেই (মঙ্গলবার) বিষয়টা তাদেরকে জানান দিয়েছি,’ যোগ করেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাবে ২০১৮ সাল থেকে গত পাঁচ বছরে সীমান্তে বিএসএফের গুলি ও নির্যাতনে ১৪৫ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর গভীর রাতে লালমনিরহাটের বুড়িমারী সীমান্তে ‘বিএসএফের গুলিতে’ বিপুল মিয়া নামে এক বাংলাদেশি নিহত হওয়ার খবর সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। এর দুদিন আগে ২৯ ডিসেম্বর হাতিবান্ধা বড়খাতা দোলাপাড়া সীমান্তে দুই বাংলাদেশির লাশ উদ্ধার করা হয়, যাদের বিএসএফ হত্যা করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।
রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ-ভারত অনন্য বন্ধুত্বে হাসিনা-মোদীর শাসনকাল: গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তাদের কথায় উঠে আসে সামীন্ত হত্যার বিষয়টি। তারা গত দশকে দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক অনেক গভীর হলেও তাতে ‘কাঁটা’ হয়ে রয়েছে সীমান্ত হত্যা বলে মন্তব্য করেন। এরপর প্রধান অতিথির বক্তব্যে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে দুদেশের সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার। সম্পর্কের ক্ষেত্রে সীমান্ত হত্যা ‘বিরক্তির’ বিষয় হয়ে রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা ইরিট্যান্ট, এটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
এটা আমাদের বিব্রত করে, আমাদের সম্পর্কটাকে এই ঘটনা যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে পারে না। সেটি হল বর্ডারে হত্যা। এবং গত সপ্তাহে যে তিনটি প্রাণ বাংলাদেশি নাগরিকদের গেছে, আমরা কিন্তু আমাদের ডিপ্লোম্যাটিক চ্যানেলে আমাদের ভাষায়, কূটনীতির ভাষায় ভারত সরকারকে জানিয়েছি।’ সীমান্তে হত্যা বন্ধের বিষয়ে সরকার সোচ্চার থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা আমি আশ্বস্ত করতে চাই সকলকে, এই বিষয়ে আমরা সবসময় সোচ্চার থাকব। এবং কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা যখন বৈঠকগুলো করি তখনও তাদের এটা কমাতে বা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে তাদের সদিচ্ছার যে কমতি নেই, এ ব্যাপারেও আমরা কিন্তু কনভিন্সড। কিন্তু অপারেশনাল লেভেলে, গ্রাউন্ড লেভেল এ বিষয়গুলো কেন ঘটছে, এই বিষয়টা আমাদের বিশদভাবে খতিয়ে দেখতে হবে।’