সমুদ্র বাণিজ্যে বাংলাদেশ ওশানগোয়িং শিপ ওনার্স এসোসিয়েশনের ক্ষমতা স্থগিত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে চলাচলকারী কন্টেনার জাহাজগুলোর এজেন্টদের সংগঠন বাংলাদেশ কন্টেনার শিপিং এসোসিয়েশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ছয় মাসের জন্য দেশীয় জাহাজ মালিকদের উক্ত সংগঠনের ক্ষমতা স্থগিত করে রুলনিশি জারি করেছে।
সূত্রে জানা যায়, দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজকে সুবিধা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজ স্বার্থরক্ষা বিধিমালা–২০২৩ বিদ্যমান রয়েছে। এই আইন অনুযায়ী বিদেশের কোনো বন্দর থেকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে পরিবহনের জন্য পণ্য বোঝাই করতে হলে বিদেশি পতাকাবাহী জাহাজসমূহকে ১৫ দিন আগে মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্ট বা এমএমডি থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্টের প্রিন্সিপ্যাল অফিসার (পিও, এমএমডি) এই ছাড়পত্র ইস্যু করেন। তবে ছাড়পত্র প্রদানের আগে পিও এমএমডিকে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশ ওশানগোয়িং শিপ ওনার্স এসোসিয়েশনের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট বন্দরে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে দেশীয় পতাকাবাহী কোনো জাহাজ আসবে কিনা তা জেনে নিতে হয়। এক্ষেত্রে ওশানগোয়িং শিপ ওনার্স এসোসিয়েশন পিও এমএমডির ওয়েবসাইটে জাহাজটিকে ছাড়পত্র দেওয়া যায় কিনা সেই মতামত দিত। এসোসিয়েশনের অনুমোদন না পেলে পিওএমএমডি কোনো বিদেশি জাহাজকে ছাড়পত্র দিতে পারতেন না। অর্থাৎ বিদেশি জাহাজ পণ্য বোঝাইয়ের অনুমোদন পাবে কিনা তা পুরোপুরি ওশানগোয়িং ওনার্স এসোসিয়েশনের মতামতের ওপর নির্ভরশীল ছিল। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময় জটিলতা তৈরি হয়। কিন্তু দেশের প্রচলিত বিধিমালা হওয়ায় এর ব্যতয় ঘটানো সম্ভব ছিল না। সম্প্রতি বাংলাদেশ কন্টেনার শিপিং এসোসিয়েশন বিষয়টি নিয়ে আদালতে যায়। তারা অভিযোগ করে, মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্ট একটি সরকারি সংস্থা। তাদের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ ওশানগোয়িং শিপ ওনার্স এসোসিয়েশনের মতো একটি বেসরকারি ব্যবসায়ী সংগঠনের অথরিটি থাকা উচিত নয়। এটি বিদেশি জাহাজগুলোর স্বার্থহানি করছে। একই সাথে দেশের পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে অনাহুত সমস্যা সৃষ্টি করছে।
বিচারপতি মোহাম্মদ খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মোহাম্মদ খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বাংলাদেশ ওশানগোয়িং শিপ ওনার্স এসোসিয়েশনের মতামত নেওয়ার ব্যাপারটি ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করে। উচ্চ আদালতের এই আদেশের ফলে এখন থেকে ওয়েভার সার্টিফিকেট ইস্যু করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ওশানগোয়িং শিপ ওনার্স এসোসিয়েশন অথরিটি হিসেবে ওয়েবসাইটে আর মতামত দিতে পারবে না।