‘দেখিলে মায়ের মুখ, ঘুচে যায় সব দুঃখ’। যাকে ছাড়া এই জগৎ সংসারের যাবতীয় সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, আনন্দ সবই অপূর্ণ ও বৃথা মনে হয়, সেই একজন হলেন ‘মা’। মায়ের তুলনা নেই। তা কখনোই সম্ভব নয়। সকল ধর্মেই মায়ের অবস্থানকে পরম পবিত্রতার সাথে দেখানো হয়েছে। পৃথিবীতে আসার পর থেকেই আমরা মায়ের আঁচল তলে মুখ লুকিয়েছি, সকল শান্তি খুঁজেছি। শৈশব থেকে আধো আধো বোলে মাকে অনুসরণ করেই আমাদের ভাষার হাতেখড়ি। এরপর আমরা পরিচিত হতে থাকি পরিবার, পরিবেশ সবকিছুর সাথে। কৈশোরে এসে বিশেষ করে পড়ালেখার দিনগুলোতে মা যেমনি রাত জাগেন, তেমনি অসুখ বিসুখে শিয়রে বসে থাকেন। সংসার সামলানো, সন্তানের স্কুল, টিচার, খাওয়া দাওয়া সব মিলিয়ে দশভূজার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন মা। নিজে সহ্য করেন, অথচ দুঃখ কষ্টের আঁচটুকু সন্তানের গায়ে লাগতে দেন না। যতদিন পর্যন্ত সন্তান মানুষের মত মানুষ না হচ্ছে, পড়ালেখা শেষে একটা নিশ্চিত ব্যবস্থা না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত মায়ের চিন্তার শেষ থাকে না। সন্তানের সকল কৃতিত্বে যেন মায়ের সাফল্য। হাজার কাজের ব্যস্ততায় ঘরে এসে মায়ের হাসিমাখা মুখখানা দেখলেই সকল ক্লান্তি মুহূর্তেই দূর হয়ে যায়। ‘মা’-এই ডাক টুকুতেই প্রশান্তি! মা শব্দে যেন সকল বিপদ তুচ্ছ মনে হয়। মা হলেন সমস্ত শক্তির উৎস, আমরা জানি মা অভিশাপ দেন না, তবু্ও মায়ের চোখের জল সন্তানের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না। সন্তানদের এমন কোনো কাজ করা উচিত নয়, যাতে মা কষ্ট পান। যাদের মা নেই তারা বোঝেন মায়ের ভালোবাসা কী জিনিস! সুখে দুঃখে, আনন্দে যারা মাকে দু’চারটে কথা বলতে পারে না, তাদের মতো হতভাগা এই পৃথিবীতে কেউ নেই। তাই যতদিন মা বেঁচে থাকবেন, মাকে যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে রাখতে হবে। কেন না, আমরা দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বুঝি না।