কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত–সহিংসতায় বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন হাই কোর্টের একটি বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের বেঞ্চে কোটাবিরোধী আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কারীর মুক্তি এবং আন্দোলনকারীদের প্রতি আর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট আবেদনের গ্রহণযোগ্যতার শুনানিতে এ দুঃখ প্রকাশ করা হয়।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সারা হোসেন, অনীক আর হক ও মনজুর আর মতিন প্রীতম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান চৌধুরী। আড়াই ঘণ্টা শুনানি শেষে আজ বুধবার আরও শুনানির পর আদেশ দেওয়া হবে বলে জানায় আদালত। খবর বিডিনিউজের।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাতে অনীক আর হক শুনানির একপর্যায়ে ১৪৭ জনের মৃত্যুর কথা বললে রাষ্ট্রপক্ষ দেড়শ মৃত্যুর কথা জানায়। সেই তথ্য মেনে নিয়ে অনীক বলেন, আমরা সব মৃত্যুর কথা বলছি। তখন জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, সব মৃত্যুর ঘটনাই দুঃখজনক। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও মানুষের মৃত্যুতে আমরা লজ্জিত।
শুনানির সময় রিট আবেদনকারীর বক্তব্যে সাংবিধানিক অধিকারের কথা উঠলে জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, সংবিধান ও আইনে সব বিষয় লেখা আছে। কিন্তু আমরা কেউ সংবিধান, আইন মেনে চলছি না।
শুনানির এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষ পুলিশকে মেরে ঝুলিয়ে রাখার প্রসঙ্গ তুললে অনীক বলেন, জেল যখন ভাঙতে যায় তখন গুলি হয় না; মেট্রোরেলে যখন হামলা হয় তখন গুলি হয় না। এসব ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় তো পুলিশ গুলি চালাতে পারে।
আন্দোলনকারী ছয় সমন্বয়কের মুক্তি এবং গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে সোমবার এ রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন প্রীতম ও আইনন্নাহার সিদ্দিকা লিপি। এতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), সেনাবাহিনীর প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।