বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিষয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই দেখছেন বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গতকাল শনিবার তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, আমরা সরকারে আছি। সব ব্যাপারে মাথা গরম করলে চলবে না। বিষয়টি হ্যান্ডল করছেন প্রধানমন্ত্রী। যেভাবে তিনি করোনা মোকাবেলা করছেন, সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে তিনি এখানে এসেছেন। কাজেই তিনি জানেন কোন পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করতে হবে। খবর বিডিনিউজের। এদিকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের বিরোধিতায় সৃষ্ট পরিস্থিতির অবসানের আশ্বাস দিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। গতকাল শনিবার জামালপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সামপ্রদায়িকতার চিহ্ন রেখে বাংলাদেশ কোনো কাজ করে না। অসামপ্রদায়িকতার বাংলাদেশের জন্য যা করার দরকার, সে বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ভাস্কর্য নিয়ে চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে সমস্যা অনেক সমাধান হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ সমস্যা পুরোপুরি সমাধান হবে বলে বিশ্বাস করে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা কোনো সংঘাতে যাব না। আমরা যুক্তি-তর্ক দিয়ে বলব মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়। আজকে যারা ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা কি জানে না সৌদি আরবসহ মুসলিম দেশগুলোতে ভাস্কর্য আছে? সেখানে ভাস্কর্য ইসলামবিরোধী নয়, বাংলাদেশে কেন এটা অযৌক্তিক?
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়েল চত্বরে জাতীয় তিন নেতার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন। সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ করে কাদের বলেন, তিনি আমাদের জাতীয় নেতা, গণতন্ত্রের মানসপুত্র, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক গুরু। পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক আমলে গণতন্ত্রের জন্য তিনি বারবার লড়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, দেশ ত্যাগ পর্যন্ত করেছেন। তিনি বারবার বলতেন গণতন্ত্রই আমার জীবনের মূল মন্ত্র। শাসনতন্ত্রের প্রশ্নে জনগণের রায়ই শেষ কথা, তিনি সেটা বলতেন।
বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিকাশের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের এই গণতন্ত্র অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে আজকে এই অবস্থায় এসেছে। এখন গণতন্ত্র শৃক্সখলমুক্ত হয়েছে কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। এইদিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা হবে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া। গণতন্ত্র একটি বিকাশমান ধারা।
তিনি বলেন, এদেশে একটি মহল আছে যারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও আচরণে, তাদের কর্মকাণ্ডে কখনও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। সামপ্রদায়িক অপশক্তি আছে এরা গণতন্ত্রের শত্রু। এরা গণতন্ত্রের বিকাশ চায় না। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা করতে হবে।