ভারতের কাছে ঢাকা টেস্টে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বললেন আমরা শেষ পর্যন্ত লড়েছি। চেষ্টার কোনো কমতি তারা রাখিনি। তবে ঘাটতি যে ছিল, সেটি প্রকাশেও অকপট বাংলাদেশ অধিনায়ক। মিরপুর টেস্টের চতুর্থ দিন বাংলাদেশের সম্ভাবনার সকাল আরও রঙিন হয়ে ওঠে সাকিব আর মেহেদী হাসান মিরাজের সৌজন্যে। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই নাইটওয়াচম্যাচ জয়দেব উনাদকাটকে ফেরান সাকিব। এরপর রিশাভ পান্ত ও আকসার প্যাটেলকে বিদায় করে দেন মিরাজ। ম্যাচ তখন বলতে গেলে বাংলাদেশের মুঠোয়। আর একটি উইকেট নিতে পারলেই ভারতের শেষের দুই ব্যাটসম্যানকে পেয়ে যেতেন সাকিবরা। কিন্ত সেই উইকেটই আর ধরা দেয়নি। অষ্টম উইকেটে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও শ্রেয়াস আইয়ারের অবিচ্ছিন্ন ৭১ রানের জুটিতে ভারত জিতে যায় ৩ উইকেটে। ১ রানে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে দিয়ে অশ্বিন অপরাজিত থাকেন ম্যাচ জেতানো ৪২ রানে। প্রথম ইনিংসে ৮৭ রান করা শ্রেয়াস এবার করেন অপরাজিত ২৯। সাকিব কৃতিত্ব দিলেন এই দু’জনকে। স্বীকার করলেন নিজেকের ঘাটতির কথাও। তবে দাবি করলেন, হারের আক্ষেপের চেয়ে লড়াইয়ের সন্তুষ্টিই বেশি তার। আমার মনে হয় ওরা ভালো ব্যাট করেছে ওই সময়। অশ্বিন ও শ্রেয়াস আইয়ার, দুজনই ভালো ব্যাট করেছে। খুব সহজ উইকেট ছিল না ব্যাটিংয়ের জন্য। কিন্তু ওরা যেভাবে ব্যটি করেছে, ওদেরকে কৃতিত্ব দিতে হয়। আমরা চেষ্টা করেছি, সব দিক থেকেই চেষ্টা করেছি। কিন্তু একটু ঘাটতি ছিল আমাদের, কোনোভাবে।
আক্ষেপ নেই আমার ওরকম কোনো। আমার মনে হয়, আমরা পুরো টেস্ট ম্যাচই ভালো লড়াই করেছি এবং এই মানসিকতাই সামনের টেস্ট গুলোতে থাকবে বলে আশা করি আমি। তাহলেই আমি মনে করি, ফল আমাদের পক্ষে আসবে। তবে আদতে আক্ষেপ যে কিছুটা আছে, তা পরিষ্কার হয়ে গেল সাকিবের পরের কথাতেই। কোন জায়গাগুলোয় আরেকটু বেশি চেষ্টা করতে পারতেন তারা, বাংলাদেশ অধিনায়ক তুলে ধরলেনও সেটিও। ৭৫ রানে ৭ উইকেটে ফেলে দেওয়ার পর তো আশা করবেন যে আপনার দল জিতবে। বিশেষ করে যখন আরও ৮০ রান দরকার, কেবল তিন উইকেট আছে। বলাটা কঠিন যে কী হলে কী হতে পারত। আমার মনে হয় আমরা সব দিক থেকেই চেষ্টা করেছি। হয়তো আরেকটু ভালো বল করতে পারতাম, আরও কিছু সুযোগ হয়তো তৈরি করতে পারতাম যে ধরনের উইকেটে খেলা হচ্ছিল, এখানে হয়তো আরও একটি–দুটি সুযোগ তৈরি করা উচিত ছিল। তবে আমি খুবই খুশি যেভাবে আমরা পুরো টেস্ট ম্যাচে লড়াই করেছি। কাছে গিয়ে জিততে না পারার আফসোস আছে। তবে এটাও ভালো যে অন্তত আমরা কাছে যেতে পারছি এখন। আশা করি, পরের বছর থেকে ভালো ফল দেখাতে পারব। শ্রেয়াস ও অশ্বিনের জুটি যখন একটু একটু করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান, বাংলাদেশের জয়ও ক্রমাগত দূরে সরতে থাকে। যে ওভারে খেলা শেষ হলো, মিরাজের সেই ওভারের আগে ভারতের লাগত ১৬ রান। ওই ওভারের প্রথম বলে মিরাজকে ছক্কায় ওড়ান অশ্বিন। পরে এক বলে দুই রান আর দুটি বাউন্ডারিতে খেলা শেষ করে দেন অশ্বিন। সাকিব বলেন অশ্বিনের ওই ছক্কার আগ পর্যন্তও তারা বিশ্বাস হারাননি। শেষ দিকে যখন মিরাজের বলে ছক্কা হলো, তার আগ পর্যন্ত বিশ্বাস ছিল।
কারণ এখানে দ্রুত তিনটা উইকেট পড়তেই পারে। একজন বোলার হ্যাটট্রিক করতেই পারে। এটা খুব স্বাভাবিক। তবে শেষ পর্যন্ত সেই ‘একটুর জন্য’ না পারাই হতাশার কথাই আসতে থাকে ঘুরেফিরে। অশ্বিন এবং শ্রেয়াস খুব ভালো ব্যাট করেছে। আমাদের স্পিনারদের খুব ভালো সামলেছে। তবে সুযোগ ছিল আমাদের। যখন আমরা চাপ তৈরি করেছিলাম। সুযোগ এসেছিল। একটু এদিক–ওদিক হলেই হয়তো হতে পারত। আর কিছু বলার নেই।