লোহাগাড়ায় কক্সবাজারগামী প্রবাল এক্সপ্রেসে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট আতংকে চলন্ত ট্রেন থেকে শিশুকে নিয়ে লাফ দিয়েছেন মা–বাবা। এতে হামদান নামে ৮ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন শিশুর মা–বাবা। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রেললাইনের উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের রশিদের পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন কক্সবাজার সদর থানার পিএমখালি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের হাঙরঘোনা এলাকার সোলতান আহমদের পুত্র আবদুর রাজ্জাক (৩০) ও তার স্ত্রী লিজা আক্তার (২০)।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনাস্থলে কক্সবাজারগামী প্রবাল এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেন থেকে হঠাৎ শিশুসহ এক দম্পতিকে লাফ দিতে দেখেন। পরে তাদেরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু হামদানকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শিশুর নানা মো. মিজান জানান, গত ৩ এপ্রিল তার মেয়ে নাতি ও স্বামীকে নিয়ে কক্সবাজার থেকে বাঁশখালী উপজেলার গুনাগরী এলাকায় বেড়াতে আসেন। কয়েকদিন থেকে মেয়ে ও নাতিকে রেখে স্বামী পুনরায় কক্সবাজার চলে যান। মঙ্গলবার সকালে স্বামী তার স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়িতে আসেন। তারা বাঁশখালী থেকে গাড়িতে করে সাতকানিয়া রেল স্টেশনে আসেন। সেখান থেকে প্রবাল এক্সপ্রেসে করে কক্সবাজার যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে। তার মেয়ের স্বামী কক্সবাজারে একটি নুরানী মাদ্রাসায় শিক্ষকতার পাশাপাশি মোবাইল মেরামতের কাজ করেন।
লোহাগাড়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার দিদার হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কক্সবাজারগামী প্রবাল এক্সপ্রেসের ‘ড’ বগিতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে ধোঁয়া বের হয়। এতে বগির ভেতর থাকা যাত্রীদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়। পরে শর্ট সার্কিটের সমস্যাটি লোহাগাড়া স্টেশনে এসে সমাধান করা হয়েছে। তবে বৈদ্যুতিক সার্কিটের কারণে চলন্ত ট্রেন থেকে কেউ লাফ দেওয়ার বিষয়টি তিনি অবগত নন।
লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শিমুল দত্ত জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে এক শিশু ও তার মা–বাবাকে হাতপাতালে নিয়ে আসেন স্থানীয়রা। তবে হাসপাতালে আনার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
লোহাগাড়া থানার এসআই জাহেদ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে ফোর্স পাঠানো হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহত শিশুর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।