‘ আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে?/ তোমার ছেলে উঠলে মা গো রাত পোহাবে তবে’। শৈশবের সাথে জড়িয়ে থাকা এই পঙক্তি গুলো আজো আমাদের মাঝে উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। ভোরবেলার পড়া আর সন্ধ্যায় আযানের সাথেই পড়তে বসা-এ নিয়ে ভাই-বোন, প্রতিবেশি বন্ধুদের সাথে রীতিমত প্রতিযোগিতাই ছিল।কালের স্রোতে সেই লাইনগুলো আর শোনা যায়না! ভোরের সূর্য এই প্রজন্মকে হাতছানি দেয়না। বরং কড়া রৌদ্রজ্জ্বল সকাল তাদের জন্য অপেক্ষা করে থাকে কখন অ্যানড্রয়েড ফোন বা ল্যাপটপ হাতে নিয়ে বসবে। করোনার ভয়াবহ ছোবল আমাদের সন্তানদের শিক্ষা ব্যবস্থার এমন এক দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে যেখানে সকল দুশ্চিন্তা গ্রাস করছে সকল অভিভাবকদের। তাই শিক্ষা পদ্ধতিতে আমরা যতটা আশ্বস্ত ঠিক ততটাই আতঙ্কিত! যে বয়সে একটা সাধারণ মোবাইলের জন্য ছেলে মেয়েদের বাবা- মায়ের কাছে কতো বায়না, আজ তারাই খুশি হয়ে নিশ্চিন্তে, নির্ভাবনায় সন্তানের হাতে অ্যানড্রয়েড ফোন তুলে দিচ্ছেন। না হলে সন্তানের পড়ায় ব্যাঘাত ঘটবে যে! কিন্তু আমাদের সন্তানেরা তার যথাযথ ব্যবহার করছে তো? যাদের হাতের মুঠোয় পুরো পৃথিবী তুলে দিচ্ছি,সেই সন্তান বাবা- মায়ের বিশ্বাস ভঙ্গ করছেনা তো? কতো প্রশ্ন মনে উঁকি দিচ্ছে! আজকাল গেইমের নামে তারা ভয়ংকর নেশার জগতে চলে যাচ্ছে। ক্লাসের নামে চলছে চ্যাটিং,গ্রুপিং! যদিও সবাই একই রকম নয়। আমাদের সন্তান- যাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখি, যাদের মাঝে আমাদের ভবিষ্যৎ, তারা যেন অঙ্কুরেই বিনষ্ট না হয় সেদিকে সজাগ হতে হবে নতুবা সব কষ্ট,পরিশ্রম বৃথা যাবে। “বিশ্বাস ও ভালোবাসার” মাধ্যমে তাদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তুলতে হবে। লেখা-পড়া, খেলা-ধুলা,বিনোদন সবকিছুকে নিয়মের মধ্যে আনতে সন্তানের সাথে একাত্ম হয়ে মিশতে হবে।এর কোনো বিকল্প নেই।সব হাতের মুঠোয় পেয়েও সে যেন লোভী,হিংস্র বা যথেচ্ছাচারী হয়ে না ওঠে। আমরা সেদিনের অপেক্ষায় আছি,যেদিন সমস্বরে
আবার বলতে পারবো–“উঠলো ছুটলো ঐ খোকা খুকি সব / ‘উঠেছে আগে কে’ ঐ শোনো কলরব”।