সত্য-মিথ্যার দ্বন্দ্বে ইমাম হোসাইনের (রা.) নেতৃত্বে সত্যের বিজয় ঘটেছে

জমিয়তুল ফালাহয় শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে বক্তারা

আজাদী ডেস্ক | মঙ্গলবার , ৯ জুলাই, ২০২৪ at ৭:৪৫ পূর্বাহ্ণ

নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে দশদিন ব্যাপী ৩৯তম আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার বাদ আসর প্রথম অধিবেশন ও বাদ মাগরিব দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। প্রথম দিনের মাহফিলে হাজারো দ্বীনদার আহলে বায়তপ্রেমী মানুষের উপস্থিতি ছিল। কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের আয়োজনে মাহফিলের উদ্বোধনী দিনে দেশিবিদেশি ইসলামী স্কলার ও আলোচকরা বক্তব্য রাখেন। তারা বলেছেন, সত্যমিথ্যার মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত চিরন্তন। প্রতিটি যুগে হকবাতিলের উপস্থিতি ছিল ও থাকবে। কিন্তু ৬১ হিজরিতে ঐতিহাসিক কারবালা ময়দানে হকবাতিলের মধ্যে দ্বন্দ্বসংঘাতে নবী দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইনের (রা.) নেতৃত্বে হক ও সত্যের চূড়ান্তভাবে বিজয় ঘটেছে। সত্যানুসন্ধিৎসু হকপন্থী মানুষের ঈমানি চেতনা ও প্রেরণাই হচ্ছেন আহলে বায়তে রাসূল (.) ও হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)। তাঁদের আঁকড়ে ধরে থাকলে কখনো ঈমানচ্যুতি ঘটবে না।

গতকালের মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, মহররম মাসে সংঘটিত কারবালার ঘটনা আমাদের শোকাতুর ও বেদনার্ত করে তোলে। আহলে বায়তে রাসুল (.) তথা নবী পরিবারের ওপর নরাধম ইয়াজিদি বর্বরতার কথা জেনে আমরা শোকে বেদনায় কাতর হয়ে পড়ি। তাই কারবালা আমাদের চেতনা, প্রেরণা ও ঈমানি উজ্জীবনের স্মারক। জমিয়তুল ফালাহর দেখাদেখি দশদিনের শাহাদাতে কারবালা শাহফিল দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবদুর রশীদ।

মাহফিলে বিদেশি আলোচক ছিলেন, ভারতের কাসওয়াসা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন তাজুল উলামা আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ নুরানী মিয়া আশরাফি আল জিলানি। তিনি বলেন, কারবালা হচ্ছে মুসলিম মিল্লাতের জন্য ঈমানি চেতনা ও জজবার প্রতীক। যার অন্তরে বিন্দুমাত্র ঈমান আছে কারবালার মর্মন্তুদ ঘটনা স্মরণে এলে তার মাঝে হাহাকার ও হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটবেই। ইমাম হোসাইন (রা.) ও আহলে বায়তে রাসূলের (.) প্রতি শর্তহীন ভালোবাসা, অকুণ্ঠ আনুগত্য, শ্রদ্ধাভক্তিই ঈমানের অনিবার্য দাবি।

উদ্বোধনী বক্তব্যে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের খতিব আল্লামা সৈয়দ আবু তালিব মুহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, হকবাতিলের মধ্যে বিস্তর মৌলিক পার্থক্য। আমরা সর্বাবস্থায় হকের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবো। আর মিথ্যা ও বাতিলকে ঘৃণা করবো এটাই হোক আমাদের দৃঢ় প্রত্যয়।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ছোবহানিয়া আলিয়া মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস আল্লামা কাযী মুহাম্মদ মুঈনুদ্দিন আশরাফী বলেন, কিতাবুল্লাহ, সুন্নাতে রাসূলিল্লাহ (.), আহলে বায়তে রাসূল (.) ও আসহাবে রাসূলিল্লাহ এই চারটিই ইসলামের স্তম্ভ। এগুলোকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরলেই নাজাত মিলবে। আজ ইয়াজিদ নেই। কিন্তু আজ ইয়াজিদয়ত আছে। ইসলামের স্বচ্ছ বাগানে কিছু প্যাঁচা শুরু থেকেই ষড়যন্ত্র করেছে। এরা খারেজি ও শিয়া। এদের ব্যাপারে সচেতন হয়ে আমাদের ঈমান আকিদা বাঁচাতে হবে। আলোচনা করেন খ্যাতিমান সুন্নি বক্তা আল্লামা আবু সুফিয়ান আবেদী আলকাদেরী। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় পরিচালক আবু হাসান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন, বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকের ডিরেক্টর অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ মুহাম্মদ কাশেম, হাটহাজারী দরবার শরীফের সাজ্জাদনশীন শাহ্‌জাদা সৈয়দ আমিনুল হক আলকাদেরী, ফরহাদাবাদ দরবার শরীফের সৈয়দ মুজাম্মেল হক ফরহাদাবাদী। কোরআন মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন ক্বারী শাইখ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আজহারী। মাহফিল সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছেংঁভরঃাড়হষরহব, িি.িংযধযধফধঃশধৎনধষধ.পড়সএ।

. আল্লামা জাফর উল্লাহর সঞ্চালনায় মাহফিলে বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম, শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের কর্মকর্তা ও সদস্যগণসহ বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম, বিভিন্ন দরবারের সাজ্জাদনশীনগণ উপস্থিত ছিলেন। সালাত সালাম শেষে দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত করা হয়। মাহফিলের ৬ষ্ঠ দিন থেকে পর্দাসহকারে মহিলাদের জন্য আলোচনা শোনার ব্যবস্থা থাকবে।

মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক ও মাহফিলের প্রধান সমন্বয়ক আলী হোসেন সোহাগ, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের খতিব মওলানা আবু তালেব মো. আলাউদ্দিন, খোরশেদুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, সিরাজুল মোস্তফা, প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমদ, দিলশাদ আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা দিদারুল আলম, কবির চৌধুরী, মোহম্মদ সাইফুদ্দিন, জাফর আহমদ সওদাগর, আবদুল হাই মাসুম, ফজলুল করিম শাহেদ, হাফেজ সালামত উল্লাহ, এস এম সফি, ক্যাপ্টেন এনামুল হক, মনসুর শিকদার, মাহবুবুল আলম, খোরশেদ আলী চৌধুরী, মৌলানা নুর মোহম্মদ সিদ্দিকী, হাফেজ আহমাদুল হক, মাইনুদ্দিন মিঠু, মো. সাহাবুদ্দিন, আবদুর রহমান, জহির উদ্দিন, ইয়াসিন আরাফাত, অধ্যাপক অহিদুল আলম প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখেলাপিদের ঋণমুক্ত হতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নীতিমালা
পরবর্তী নিবন্ধস্টেশন রোডে যুবক খুন তিন কারণে