সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে ঢাকা এখন বিপজ্জনক নগরী : ফখরুল

| বৃহস্পতিবার , ৯ মার্চ, ২০২৩ at ৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ

সরকারের তদারকি সংস্থার ‘সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে’ ঢাকা এখন ‘বিস্ফোরণোন্মুখ’ ও ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক’ নগরীতে পরিণত হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

চট্টগ্রামের পর এক দিনের ব্যবধানে ঢাকার দুটি স্থানে বড় ধরনের বিস্ফোরণে প্রাণহানির ঘটনা তুলে ধরে বুধবার নয়া পল্টনে বক্তব্য দিচ্ছিলেন এ বিএনপি নেতা।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে’ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের শোভাযাত্রার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে দেখছেন, শুধু বিস্ফোরণ হচ্ছে। কীভাবে বিস্ফোরণ হচ্ছে? ওই ভবনের যে নির্মাণ কাজ বা সেখানে রক্ষণাবেক্ষণে কোনো দেখাশোনা হয় না, নজরদারি নাই। সরকারের যে ডিপার্টমেন্টগুলো আছে, যাদের এসব ভবন দেখাশোনা করার কথা, যাদের নজরদারি করার কথা, তারা কাজ করে নাসব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।’ খবর বিডিনিউজের।

ঢাকা ও চট্টগ্রামে তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনায় ‘সরকারের ব্যর্থতা’কে দায়ী করে এর আগেও বক্তব্য রেখেছেন বিএনপি নেতা।

মঙ্গলবার গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে ক্যাফে কুইন নামের একটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে; এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার দুই দিন আগের মিরপুর রোডে বিস্ফোরণে তিনতলা একটি ভবনের আংশিক ধসে পড়ে। তাতে মৃত্যু হয় তিনজনের। ওইদিনই কঙবাজারে উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে আগুনে পুড়ে যায় প্রায় দুই হাজার ঘর।

তারও আগের দিন শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি সীমা অঙিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে সাতজনের মৃত্যু হয়। চার দিনের ব্যবধানে তিনটি ঘটনার কারণ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ‘কথার লড়াই’ চলছে।

ফখরুল যেমন সরকারকে দায়ী করছেন, তেমনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখছেন।

বিএনপি নেতা বক্তব্য রাখার কিছুক্ষণ আগে দলীয় একটি সভায় কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন দেশের কাজে বাইরে, ঠিক সেই সময় আমাদের দেশে কয়েকটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটনা ঘটে গেছে। এটা নাশকতা কিনা স্বাভাবিক দুর্ঘটনা, অথবা নাশকতা, সেটা সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গুলিস্তান, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, কঙবাজারের বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, তা বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ঘটিয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখছে সরকার।’

নয়া পল্টনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সমাবেশে ফখরুল বলেন, ‘যাদের নজরদারি করার কথা তারা কাজ করে না। সব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। যার ফলে এই ভবনগুলোতে নিরাপত্তা নেইৃ এই ধরনের ভয়াবহ বিস্ফোরণ সংগঠিত হয়ে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। এবং ঢাকা মহানগর এখন একটা বিস্ফোরণোন্মুখ নগরীতে পরিণত হয়েছে; সবচেয়ে বিপজ্জনক নগরীতে পরিণত হয়েছে।’

পরিবেশ দূষণ নিয়েও সরকারকে দোষারোপ করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরের বাতাসকে বলা হচ্ছে পৃথিবীর সবচাইতে দূষিত। এই দূষিত মহানগরীকে ছাড়িয়েও দুর্নীতির যে তোষণ, দুর্নীতির যে বাতাসএটা এখন বাংলাদেশকে পুরোপুরি গ্রাস করে ফেলেছে।

উন্নয়নের ফানুস কোথায় গেল’

উন্নয়নশীল দেশে বাংলাদেশের উত্তরণের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিয়েও প্রশ্ন রাখেন বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, এরা (সরকার) সব সময় বলতে থাকে যে, এখন আমরা নাকি উন্নয়নশীল দেশ। উন্নয়নশীল দেশে যাচ্ছি। আজকে ইনকিলাব পত্রিকায় দেখলাম যে, জাতিসংঘের সম্মেলন কাতারের দোহাতে হয়ে গেল। সেখানে অনুন্নত দেশের যে তালিকা সেই তালিকাতে বাংলাদেশের নাম হচ্ছে দ্বিতীয়।

কোথায় গেল উন্নয়ন, কোথায় গেল ফানুস? এত যে সবসময় গলাবাজি করছে আওয়ামী লীগের নেতারামন্ত্রীরা যে বাংলাদেশ এখন সিঙ্গাপুর হয়ে গেছে, মালয়েশিয়া হয়ে গেছে, গেল কোথায়?

আমার প্রশ্ন মানুষকে প্রতারণা করে ভুল বুঝিয়ে এভাবে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন, তাদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন, নিজেদের জীবনধারণ থেকে বঞ্চিত করছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, শাম্মী আখতার, জাহান পান্না, শাহানা আখতার সানু, নায়েবা ইউসুফ ও শাহিনুর নার্গিসও সমাবেশে বক্তব্য দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে সব অক্সিজেন প্ল্যান্টের অগ্নিনিরাপত্তা খতিয়ে দেখা হবে