বলুয়ারদিঘি পাড়ে জাফর সওদাগর কলোনিতে গতকালের সংঘটিত অগ্নিকাণ্ড ৫ পরিবারকে করে দিয়েছে একেবারে নিঃস্ব। কেড়ে নিয়েছে গরিব–অসহায় পরিবার গুলোর জীবনের সুখ–আনন্দ আর বেঁেচ থাকার শেষ অবলম্বনটুকুও।
আগুন কেড়ে নিয়েছে কলোনির ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইলিয়াছ ও তার স্ত্রী পারভিন আকতারের জীবন। দুই মেয়ে এক ছেলে নিয়ে অভাবের সংসার ছিল ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইলিয়াছের। সংসারের হাল ধরতে বাবার সঙ্গে ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজে যোগ দেয় বড় ছেলে ১৮ বছরের সোহানও। পাঁচজনের সংসারে কোনোমতেই দিন চলে যাচ্ছিলো। ভয়াল আগুনে কলোনির অপর ৪ পরিবারেরও অবশিষ্ট নেই কোনো কিছু।
আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে বিলাপ ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন জাফর কলোনির রহিমা বেগম। নিজের সব সঞ্চয় হারিয়ে রহিমা বেগম বলেন, ‘আমার সব কিছু শেষ হয়ে গেলো। আমি আমার ছেলেকে স্কুলে নেয়ার জন্য মুখ ধুতে গেছি। এসে দেখি আমার সব কিছু পড়ে ছাই হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, মানুষের বাসা–বাড়ি থেকে কাঁথা এনে নিজের ঘরে সেলাই করি। তিল তিল করে আমি আড়াই লাখ টাকা জমা করেছি। দেড় ভরি স্বর্ণ ছিল। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার সেলাই মেশিনটাও পুড়ে শেষ হয়ে গেছে।’ আমি একোবারে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। এসময় পুড়ে যাওয়া ড্রয়ার থেকে পোড়া টাকার বান্ডিল গুলো বের করে সাংবাদিকদের দেখাতে দেখাতে কান্নায় ভেঙে পড়েন রহিমা বেগম। বলেন, এক ছেলে ৯ম শ্রেণিতে পড়ে। তার সব বইপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এভাবে পুড়েছে কলোনির আরো এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর আড়াই লাখ টাকা।
রহিমা বেগমের মতো এই কলোনীর সব গুলো পরিবারের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়–তাদের বাসস্থানসহ সব স্বপ্ন গ্রাস করেছে গতকালের ভোরের আগুনে। আগুনের স্থায়ীত্ব ক্ষণস্থায়ী হলেও এই কলোনির রহিমাদের ক্ষতির রেশ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকবে তাদের মনে–প্রাণে।